32 C
Dhaka
Wednesday, September 11, 2024

‘আমার দুই সন্তানকে কে দেখবে, তারা কাকে বাবা বলে ডাকবে?’

‘আমার বাপের বাড়িতে গিয়ে দাঁড়ানোর মতো অবস্থা নেই। স্বামীও আমাকে অকূলে ভাসিয়ে চলে গেলেন। আমি কীভাবে এই দুই সন্তানকে মানুষ করব? কে তাদের দেখবে? কে তাদের মুখে খাবার তুলে দেবে? তারা কাকে বাবা বলে ডাকবে?’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন গত ৫ আগস্ট নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানার সামনে পুলিশের গুলিতে নিহত মাইক্রোবাসের চালক মাঈন উদ্দিনের স্ত্রী নুরুন নাহার (২৬)।

সোনাইমুড়ী পৌরসভার শিমুলিয়া গ্রামে মাঈন উদ্দিনের বাড়ি। সেখানে গেলে কথা হয় নুরুন নাহারের সঙ্গে। তার দুই সন্তান মো. সিফাত উদ্দিন (৮) ও ইসফিয়া আক্তার (৬) এখনো জানে না তাদের বাবা কোথায়।

আরো পড়ুন  বিনা চিকিৎসায় স্ত্রীর মৃত্যু, মেয়েও অসুস্থ; পেনশন মিলবে কবে?

নুরুন নাহার বলেন, রাস্তায় গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় ৫ আগস্ট সোমবার মাইক্রোবাস নিয়ে বের হননি তার স্বামী। দুপুরের খাবার খেয়ে কিছুক্ষণ বাড়িতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে মাইক্রোবাস গ্যারেজে রেখে আসার কথা বলে বের হন। তখন তারও ঘুম ভেঙে যায়। পেছন পেছন তিনিও গিয়েছিলেন। স্বামীকে বলেছিলেন, সোনাইমুড়ী বাজারের দিকে না যেতে। কিন্তু ততক্ষণে তার স্বামী বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।

তিনি বলেন, সেদিন প্রতিবেশীরা বলছিলেন, সোনাইমুড়ী থানার সামনে গন্ডগোল হচ্ছে। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে পাশের বাড়ির একটি মেয়ে এসে তাকে জানায়, তার স্বামী মাঈন উদ্দিন গুলি খেয়েছেন। তবে নুরুন নাহার তার কথা বিশ্বাসই করতে পারেননি। পরে আরও কয়েকজন একই কথা বলায় তার বিশ্বাস হয়। এরই মধ্যে একজন দৌড়ে এসে জানান, তার স্বামী মারা গেছেন।

আরো পড়ুন  নানার ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা নাতনি

কাঁদতে কাঁদতে নুরুন নাহার বলেন, ‘বাড়িতে ঘরের ভিটার জায়গাও ছিল না। বাড়ির একজনের কাছ থেকে অল্প পরিমাণ জায়গা কিনে ঋণ করে কোনোমতে ছোট্ট একটি আধা পাকা ঘর করেছে আমার স্বামী। এখনো অনেক টাকা ঋণ আছে। ঘরে সন্তানদের খাবারেরও ব্যবস্থা নেই। আমার বাবার বাড়িতে গিয়েও আশ্রয় নেয়ার অবস্থা নেই।’

এর আগে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নোয়াখালীর অন্যান্য উপজেলার মতো সোনাইমুড়ীতেও আনন্দ মিছিল বের করেছিল ছাত্র-জনতা। বিকেল আনুমানিক পৌনে পাঁচটার দিকে সোনাইমুড়ী বাইপাস এলাকা দিয়ে একটি আনন্দ মিছিল যাওয়ার সময় একদল মিছিলকারী আকস্মিক সোনাইমুড়ী থানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ গুলি করলে প্রথম একজন মারা যান। এরপর মারা যান তিন পুলিশ সদস্যসহ আরও ছয়জন। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা থানা ভবনে অগ্নিসংযোগ করে এবং থানার সামনে থাকা পাঁচটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

আরো পড়ুন  ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার
সর্বশেষ সংবাদ