ফরিদপুরের সদরপুরে থানা থেকে লুট করা অস্ত্র নিয়ে তিন বন্ধু টিকটক করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন মারা গেছেন এক যুবক। গত ৬ আগস্ট ওই যুবক গুলিবিদ্ধ হন। সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল ৬টার দিকে ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
নিহত যুবকের নাম পলাশ হোসেন (১৮)। সে সদরপুর উপজেলার আটরশি গ্রামের মোশারফ হোসেনের বড় ছেলে। মোশারফ হোসেন একটি খাবার হোটেলের মালিক। উপজেলার আটরশি মোড়ে তার দোকান রয়েছে। পলাশ তার বাবার সঙ্গে হোটেলেই কাজ করতেন।
জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট সকালে পলাশ তার বাবার হোটেলে কাজ করছিলেন। এ সময় তার দুই বন্ধু সদরপুর সরকারি কালেজের একাদশ শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী পলাশকে হোটেল থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরে তারা আড়াই রশি গ্রামে পলাশের নানা মোসলেম মাতুব্বরের বাড়িতে যান। ওই বাড়ির একটি কক্ষে তারা তিনজন একত্রিত হয়ে গত ৫ আগস্ট সদরপুর থানা থেকে লুট করা একটি শর্টগান নিয়ে টিকটক ভিডিও করার জন্য অস্ত্রটি একে অপরের মাথায় তাক করে অভিনয় করতে থাকেন। হঠাৎ শর্টগান থেকে গুলি বের হয়ে তা পলাশের মাথায় লাগে। গুলির শব্দ এবং পলাশের চিৎকার শুনতে পেয়ে বাড়ির লোকজন ছুটে যান সেই কক্ষে। সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পরে থাকতে দেখা যায় পলাশকে।
পলাশকে প্রথমে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিল হাসপাতালে নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সেখান থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর থেকে ঢাকা নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঢাকার নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ছয় দিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ভোরে মারা যান পলাশ।
সদরপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় পলাশের মা পারুলী আক্তার বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত করলে জানা যাবে থানা থেকে লুট করে নেয়া অস্ত্র দিয়ে বন্ধুরা টিকটক করতে গিয়ে গুলি বের হয়ে পলাশ মারা গেছেন নাকি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
