মদপান করে মসজিদের জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ক্যাডার নামধারী জাইদুল ইসলামের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে গ্রামবাসী ও সাধারণ মুসল্লিরা।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মনোহরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) গ্রামে সাইদার নামের এক ব্যক্তির ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল। এ সময় উচ্চস্বরে সাউন্ড বক্স দিয়ে গান বাজনা চলছিল। নামাজ আদায় করতে সমস্যা হলে স্থানীয় মসজিদের সভাপতি সেরাজুল ইসলাম সরদার সাউন্ড বক্স বন্ধ করতে বলে তখন সাইদার না শুনলে সমাজের লোকজন ও ওই গ্রামের মুসল্লিরা তাকে মসজিদে আসতে নিষেধ করে।
বিষয়টি সাইদার তার বন্ধু জাইদুলকে (৩৫) বললে সে বিরোধিতা করে শনিবার বিকেলে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের অস্ত্র নিয়ে আঘাত করতে যান। তখন মসজিদের আশেপাশে কাউকে না পেলে পরে এরই জের ধরে সন্ধ্যায় জাইদুল মদপান করে মসজিদের একটি জানালার কাঁচ ভেঙে ফেলে।
এতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগায় সেই গ্রামের মুসল্লি ও মসজিদ কমিটির সদস্যরা মাইকে জাইদুলের ঘর বাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘোষণা দেয়। পরে আশেপাশের এলাকা থেকে শত শত মানুষ একত্রিত হয়ে জাইদুলের বাড়িতে আগুন দেয়।
এ সময় ঘরে থাকা দুটি মোটরসাইকেল, টিভি-ফ্রিজ, ধান মাড়াই করার মেশিনসহ মূল্যবান আসবাবপত্র ও নগদ অর্থ পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জাইদুল ইসলামকে উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।
স্থানীয়রা বলছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়ে দাপট দেখাত। এখন সুদের কারবারি করে চলে সে।
স্থানীয় মাহবুব আলম ও সাধারণ মুসল্লিরা বলেন, মসজিদের জানালা ভাঙচুর করে ধর্মীয় স্থানে আঘাত করেছে সে। তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার। এজন্যই সাধারণ মুসল্লি ও গ্রামের মানুষ তার বাড়ি ঘরে আগুন দেয় ও ভাঙচুর করে।
জাইদুলের ভাই আজাদুল বলেন, আমার ছোট ভাই কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল না। আর যারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে তাদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ওসি জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেরাজুল ইসলাম সরদার জাইদুলের বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙচুর ও অস্ত্র আইনের একটি মামলা করেন। আসামিকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।