27 C
Dhaka
Friday, November 15, 2024

তিন মাসে দেশে নতুন কোটিপতি বেড়েছে ৩ হাজার

দেশের ব্যাংকগুলোতে কোটি টাকা রয়েছে, এমন হিসাবের (অ্যাকাউন্ট) সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে। বিশেষ করে আর্থিক সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যেও বড় অঙ্কের জমার হিসাব সংখ্যা বাড়ছে। এ বছরের জুনের প্রান্তিক শেষে ব্যাংকে কোটি টাকার বেশি রয়েছে; এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের হিসাবের সংখ্যা এক লাখ ১৮ হাজার ছাড়িয়েছে। যা আগের প্রান্তিক মার্চের চেয়ে দুই হাজার ৮৯৪টি বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুন ভিত্তিক হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পিষ্ট। সাধারণ মানুষ এখন সংসারের ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে করে ব্যাংক টাকা জমানোর চেয়ে অনেকে আগের জমানো অর্থ ভেঙে খরচ করছেন। এমন পরিস্থিততেও এক শ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। এরা হচ্ছে বিত্তশালী বা বড় প্রতিষ্ঠান।

আরো পড়ুন  ভারতের প্রত্যন্ত গ্রামে কমলার বিজয়ের জন্য প্রার্থনা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৫২৩। এসব হিসাবে জমা আছে ১৮ লাখ ৩৮ হাজার ৮৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে— এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা রয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টি। এসব হিসাবে জমা আছে সাত লাখ ৭৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট আমানতের ৪২.০৫ শতাংশ কোটি টাকা এসব হিসাবধারীর।

তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ১ কোটি টাকার বেশি আমানতের ব্যাংক হিসাব ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৮৯০টি। ওইসব ব্যাংক হিসাবে মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৪০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসের ব্যবধানে কোটিপতি হিসাব বেড়েছে দুই হাজার ৮৯৪ টি। তার আগে গত বছরের (২০২৩ সাল) ডিসেম্বর পর্যন্ত এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৬ হাজার ৯০৮ টি। আর মোট জমা ছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা।

আরো পড়ুন  বিদেশে বাংলাদেশিদের ক্রেডিট কার্ডে খরচ ৫০৭ কোটি টাকা

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল পাঁচ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮। এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩, ১৯৯৬ সালে দুই হাজার ৫৯৪, ২০০১ সালে পাঁচ হাজার ১৬২, ২০০৬ সালে আট হাজার ৮৮৭ এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩।

আরো পড়ুন  এক হাজার টাকার নোট বাতিল নিয়ে যা বললেন অর্থ উপদেষ্টা

২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে এ আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০। ২০২১ সালের ডিসেম্বর বেড়ে তা দাঁড়ায় এক লাখ ১৯৭৬টিতে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সেই হিসাবের সংখ্যা ছিল এক লাখ নয় হাজার ৯৪৬টি। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে দাঁড়ায় এক লাখ ১৬ হাজার ৯০৮টি। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জুনে সেই হিসাবের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৭৮৪টিতে।

সর্বশেষ সংবাদ