লেবাননের ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন হিজবুল্লাহর মহাসচিব সাইয়েদ হাসান নাসরুল্লাহ বলেছেন, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত আঞ্চলিক প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলায় অন্তত দেড় হাজার দখলদার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। হাসান নাসরুল্লাহর উদ্বৃতি দিয়ে খবর প্রেস টিভির।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত সংঘর্ষে নিহত দখলদার সেনাদের সংখ্যা এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কি না তা পরিষ্কার করেননি হিজবুল্লাহ মহাসচিব।
গতকাল (সোমবার) হিজবুল্লাহর সিনিয়র কমান্ডার মোস্তফা বদরুদ্দিনের শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য প্রকাশ করেন হাসান নাসরুল্লাহ। ২০১৬ সালে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের হামলায় শহিদ হন মোস্তফা বদরুদ্দীন।
গাজার প্রতিরোধকামী যোদ্ধা এবং হিজবুল্লাহর রকেট ও ড্রোন হামলায় হতাহত ইসরায়েলি সেনাদের কথা গোপন রাখে নেতানিয়াহু সরকার।
হিজবুল্লাহ মহাসচিব তার বক্তৃতায় আরও বলেন, গাজা উপত্যকায় ৩৫ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক হত্যা করলেও ইহুদিবাদী ইসরায়েল তাদের ঘোষিত কোনো লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামলা করে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এই হামলায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের মতে, ১ হাজার ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজারেরও বেশি নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গাজায় নিহতের অর্ধেকই নারী ও শিশু। সেখানে প্রতি ১০ মিনিটে নিহত হচ্ছে একটি করে শিশু। আহত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ায় এখনো নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা হাজার হাজার। ইসরায়েলি হামলায় গাজার এক-তৃতীয়াংশের বেশি ভবন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। উপত্যাকার ২৩ লাখ মানুষের প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে।
গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে ঢুকতে পারছে না কোনো গাড়ি। ত্রানবাহী ট্রাকেও হামলা করছে ইসরায়েলী সেনারা। কখনো কখনো ত্রানবাহী ট্রাক আটকে গাজাবাসীর জন্য নিয়ে যাওয়া দ্রব্য সমাগ্রী ফেলে দিচ্ছে তারা। ফলে ব্যাপক খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে সেখানে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাপক মানবিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে পুরো গাজা উপত্যকায়।
জাতিসংঘ সহ অন্যন্য মানবাধিকার সংস্থা গাজায় দুর্ভিক্ষের সতর্কতা উচ্চারণ করছে বারবার। এছাড়া গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ বিক্ষোভ অব্যাহত থাকলেও তা কানে তুলছে না ইসরায়েল।