এক সারিতে চারটি কবর, একটু দূরেই আরও তিনটি। সাত কবরে শোয়ানো হলো মা ও দুই মেয়েসহ গ্রামের সাত জনকে। গতকাল শনিবার (২২ জুন) বরগুনার আমতলীতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে এতগুলো মানুষের লাশ ফেরায় এলাকায় চলছে মাতম।
রোববার (২৩ জুন) রাত তিনটার দিকে মরদেহগুলো মাদারীপুরের শিবচরে ভদ্রাসন গ্রামে পৌঁছলে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। সকালে জানাজা শেষে পারিপারিক কবরস্থানে তাদের দাফন হয়।
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এ শোক কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্বজনরা। কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশের পরিবেশ।
স্থানীয়রা জানান, বরগুনায় বোনের মেয়ে হুমায়রা আক্তারের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাচ্ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ। দুপুরে হলদিয়া ইউনিয়নের ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়ে তাদের মাইক্রোবাস ও একটি অটোরিকশা পার হওয়ার সময় ব্রিজ ভেঙে দুটোই খালে পড়ে যায়। এ সময় অটোরিকশার যাত্রীরা বের হয়ে এলেও মাইক্রোবাসের কয়েকজন যাত্রী বের হতে পারেননি। এতে ৯ জন নিহত হন।
দুর্ঘটনা থেকে আজাদ বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান তার পরিবার ও স্বজনদের ৭ জন। এরা হলেন- আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী শাহানাজ আক্তার মুন্নী (৪০) এবং তার দুই মেয়ে তাহিদা (৭) ও তাসদিয়া (১১)। এছাড়া একই এলাকার মৃত ফকরুল আহম্মেদের স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০), সোহেল খানের স্ত্রী রাইতি আক্তার (৩০), বাবুল মাদবরের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৪০) ও রফিকুল ইসলামের স্ত্রী রুমি বেগম (৪০)।
নিহত বাকি দুজন হলেন: বরগুনার আমতলীর জহুরুল ইসলামের স্ত্রী জিনিয়া (৩৫) এবং ছেলে রুবায়েত ইসলাম (৪)।
শিবচরের ভদ্রাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বলেন, ‘একই পরিবারের ৭ জন মারা যাওয়ায় পুরো ইউনিয়নজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের পরিবারকে স্বান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই।’
মাদারীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাসুদ আলম বলেন, ‘সেতু ভেঙে মাইক্রোবাস খালে পড়ে নিহত ৯ জনের ৭ জনই মাদারীপুরের। এটি খুবই দুঃখজনক। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।’