সম্প্রতি শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারকে ঘিরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলেছে। সরকারের উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও আইনজীবীরা এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এবার এ বিষয়ে মুখ খুললেন ফরহাদ মজহার। তিনি বললেন, হাসিনার পদত্যাগপত্রের ভূমিকা নাই? অবশ্যই ভূমিকা রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সকালে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের ব্যাপারে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন লেখক ও রাজনৈতিক এই বিশ্লেষক।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে ফরহাদ মজহার লেখেন, হাসিনার পদত্যাগপত্রের ভূমিকা নেই? অবশ্যই ভূমিকা রয়েছে। পদত্যাগপত্রের কথা বলেই হাসিনার নিয়োজিত জেনারেলদের সহযোগিতায় গণঅভ্যুত্থানকে শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনস্থ করা হয়েছে। যদি হাসিনাকে উৎখাতই করা হয়ে থাকে তাহলে তার ফ্যাসিস্ট সংবিধান বহাল এবং সেই সংবিধানের অধীনে শপথ নেওয়া হলো কেন? কেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চুপ্পুর উপদেষ্টা বানানো হলো? কেন জনগণের অভিপ্রায়কে এভাবে ফ্যাসিস্ট সংবিধানের অধীনে এনে নস্যাৎ করা হলো এবং কার্যত ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থাই টিকিয়ে রাখা হলো? এর জবাবদিহি কে করবে?
এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক প্রশ্ন করে লেখেন, সংস্কারের নামে লোক দেখানো চাতুরীর কী ফায়দা? রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনের কী যুক্তি? এই চাতুরীর ফলে ফ্যাসিস্ট শক্তি দ্রুত মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পেরেছে। ভূ-রাজনৈতিক শক্তির সমীকরণ বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে চলে গিয়েছে।
তিনি আরও লেখেন, গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করবার প্রক্রিয়া বন্ধ করুন। আসুন, কুতর্ক না করে এখন সমাধান খুঁজি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি এবং বাস্তবতা মেনে নিয়ে আসন্ন লড়াইয়ের জন্য জনগণকে তৈরি করি। গণরাজনৈতিক ধারার রাজনীতিতে ছলনা চলে না। জনগণের কাছে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন থাকার ওপরই আমাদের বিজয় নির্ভর করবে। আসুন গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণ বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবার জন্য ছাত্র-জনতা-সৈনিকের মৈত্রীর ভিত্তিতে দ্রুত সংগঠিত হই। নিশ্চিত থাকুন, বাংলাদেশের জনগণ ফ্যাসিস্ট শক্তি এবং তার দালালদের কাছে মাথা নোয়াবে না।
এর আগে সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে তিনি আরেকটি ফেসবুক স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, শুরু থেকেই আমরা বলেছি যে চুপ্পুর কাছে শপথ নেওয়া ছিল আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। কিন্তু আপনারা সেটাই করেছেন। আপনারা সেনা সমর্থিত উপদেষ্টা সরকার বানিয়েছেন। বাস্তব সত্য স্বীকার করুন। এটা কি ঠিক করেছেন? আমার ভিডিওগুলো আবার শুনুন। পোস্টগুলো আবার পড়ুন। আপনারা আমাদের কারও কথা শোনেননি। এমনকি কথা বলারও প্রয়োজন বোধ করেননি। আপনাদের অনেকে দাবি করেছেন, ট্রেন মিস হয়ে গিয়েছে, এখন আর কিছু করা যাবে না। এটাও ঠিক নয়। অবশ্যই সমাধান আছে। এখন সমাধানের কথা আলোচনা না করে খামাখা পদত্যাগপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।