সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গেল ১৫ বছর ধরে তার পরিবারের দাপটের কাছে অসহায় ছিল চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার মানুষ। তার ক্ষমতার প্রভাবে ভাইয়েরা দখল করে নেন সরকারি বনে ২১২ একর জমি। যেখানে গড়ে তোলে রিসোর্ট, খামার, বাগানসহ নানা স্থাপনা। এখন এসব জমি দখল মুক্ত করতে অভিযানে নেমেছে বনবিভাগ।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা, যার সবদিকেই চোখ পড়েছিল সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের পরিবারের। পাহাড় থেকে শুরু করে জলাশয় সবই দখল করেছে পরিবারটি।
এই যেমন হাছান মাহমুদের ভাই এরশাদ মাহমুদ। দখল বাণিজ্য করে তিনি গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। শুধুমাত্র কুরুশিয়া অঞ্চলের বন বিভাগের প্রায় ২১২ একর জমি দখলে নেন তিনি।
সুখ বিলাস থেকে শুরু করে দুধ পুকুরিয়া, অন্যদিকে পূর্ব কুরুশিয়া-এই তিন বিটে এখন পর্যন্ত এরশাদের দখলে থাকা ২১২ একর জমির সন্ধান পেয়েছে বন বিভাগ। যেখানে গড়েন পর্যটনকেন্দ্র, বাগান আর গয়ালের খামারসহ নানা স্থাপনা।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কুরুশিয়া রেঞ্চ কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, রাঙামাটি-বান্দরবন সড়কের পাশে একটা পার্ক, ওখানে একটা পুকুর আছে তার ওপর একটা রেষ্টুরেন্ট ছিল এগুলো গত ২৬ আগস্ট ভেঙে দিয়েছি। এগুলো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দখলে নিয়েছিল।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেঙে পড়েছে মাহমুদ পরিবারের সাম্রাজ্য। ১৫ বছর পরিবারটির দাপটের কাছে অসহায় ছিল রাঙ্গুনিয়ার মানুষ। ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও, এখন তারা কথা বলছেন হাছান মাহমুদের পরিবারের দখল আর অন্যায় নিয়ে।
স্থানীয় এক গ্রামবাসী বলেন, কেউ মুখ খুলে কথা বলতে পারত না, স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারত না। তাই সরকার পরিবর্তনের পরপর সবকিছু উন্মোচন করছে সবাই।
হাছান মাহমুদ পরিবারের দখলে থাকা সবই এখন ধীরে ধীরে উদ্ধার করছে বন বিভাগ। এখন পর্যন্ত ১০৫ একর দখল মুক্ত হলেও, বাকি রয়েছে আরও ১১২ একর। যদিও দখলে থাকা জমির পরিমাণ আরও বেশি হতে পারে অভিযোগ মিলেছে।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মারুফ হোসেন বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে। পর্যায়ক্রমে বাকি যে বনভূমিগুলো আছে সেগুলোও উদ্ধার করা হবে। পরবর্তীতে সেখানে বৃক্ষরোপন করা হবে।
২০০৯ সাল থেকে এসব দখল চলে আসলেও বারবার জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযানের অনুমতি চাইলেও তা মেলেনি। এখন সরকারি জমি দখলমুক্ত করার পাশাপাশি মামলা করার কথা জানিয়েছে বন বিভাগ।