আশুলিয়ায় গুলিবিদ্ধ মরদেহ ভ্যানে তুলছে পুলিশ। ভ্যানে তুলেই একটি ময়লা চাদর ও রাস্তায় পড়ে থাকা ব্যানার দিয়ে লাশগুলো ঢেকে দেয়া হচ্ছে। এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যা নিয়ে তোলপাড় চলছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে আশুলিয়া থানার সামনে প্রত্যক্ষদর্শী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ দুইজনের স্বজনরা ভ্যানে থাকা লাশগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল বলে দাবি করেন।
নওগাঁর মহাদেবপুর থানার মহাদেবপুর গ্রামের নায়েদ জাকিরের ছেলে শহিদ আস-সাবুর (১৬)। জামগড়া শাহীন স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়ার শিমুলতলা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো।
তার মা রাহেলা জান্নাত ফেরদৌস বলেন, ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে অনেক গোলাগুলি হয়। সেখানে অনেকেই মারা গেছে। আমার ছেলে ৫ আগস্ট নিখোঁজ ছিল। পরে ৬ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানার একটি পুলিশের পিকআপে কয়েকজনের মরদেহ পাওয়া।
তিনি জানান, খবর পেয়ে আশুলিয়া থানায় যাই। তখন দেখি ওই গাড়িতে কয়েকটি আগুনে পুড়া লাশ। তখন আস-সাবুরের পকেটে থাকা মোবাইল ফোনের সিম থেকে মরদেহ শনাক্ত করি। আমার ধারণা, ভ্যানে থাকা লাশগুলোই গুম করার জন্য আগুন দেয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে শহিদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহিনা বেগম বলেন, ৫ আগস্ট আমার ছেলেকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। পরে ৬ আগস্ট সকালে আশুলিয়া থানায় এসে দেখি পুলিশের গাড়িতে লাশ। তখন আমার ছেলের আইডি কার্ড দেখে নিশ্চিত হই আমার ছেলে সজল। নিশ্চিহ্ন করার জন্য হত্যার পরে আগুন দিয়েছিল মরদেহগুলোতে। সেখানে আরও ছয়টি লাশ ছিল বলে দাবি করেন শাহিনা।
বাইপাইল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ৫ আগস্ট গোলাগুলির কারণে মসজিদে নামাজ পড়তে পারিনি। সন্ধ্যার পর কিছুটা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাহিরে গিয়ে দেখি আশুলিয়া থানায় পুলিশের গাড়িতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। পরে আন্দোলনকারীরা এশার নামাজের সময় আশুলিয়া থানার সামনে নিহতদের জানাজার উদ্যোগ নেন। তখন আমি ওই গাড়িতেই তাদের প্রথম জানাজা পড়ি। এ সময় পুলিশের ওই গাড়িতে আটটির মতো মরদেহ ছিল।
এ বিষয়ে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ গণমাধ্যমকে বলেন, ভিডিওটি পর্যালোচনা চলছে। এছাড়া ঘটনাটি নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।