‘আমার ডাক্তার ভাইদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপরে যে বা যারা হাত তুলেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে।’ রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ১৬ মিনিটে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি পোস্টে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘আমার ডাক্তার ভাইদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের উপরে যে বা যারা হাত তুলেছে তাদের উপযুক্ত বিচার করতে হবে। যদি কোনো পেশেন্টের মৃত্যুর জন্য হসপিটাল কর্তৃপক্ষ বা কোনো ডাক্তার দায়ী থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তারও বিচার হতে হবে। কিন্তু আমার মনে হলো আর আমি কারো গায়ে হাত তুলে ফেললাম, এই স্পর্ধা কখনো মেনে নেয়া যায়না। সকল চক্রান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রজনতা সোচ্চার আছে।’
এদিকে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত, দোষীদের গ্রেপ্তার ও সেনাবাহিনী মোতায়েন না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ চলবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের (ঢামেক) নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ। রোববার দুপুরে প্রশাসনিক ব্লকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন গতকাল শনিবার থেকে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে আমাদের তিনজন চিকিৎসককে নিউরোসার্জারি বিভাগ থেকে মারতে মারতে প্রশাসনিক ব্লকের পরিচালকের রুমে নিয়ে আসা হয়। সেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই বহিরাগতরা এসে হাসপাতালে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) এসে ভাঙচুর চালায়। এরকম ঘটনা যদি প্রতিনিয়ত ঘটতে থাকে তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায় আমরা রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা সেবা দেবো। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের আমরা চিকিৎসা সেবা দিয়েছি। যেখানে আমাদের নিরাপত্তা নেই সেখানে আমরা কীভাবে চিকিৎসা দেবো।
তিনি আরও বলেন, অনতিবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সব উপজেলা, জেলা সদরসহ সব হাসপাতালে আর্মি নিয়োগ করতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগ করতে হবে।
এ বিষয়ে নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহনেওয়াজ বিশ্বাস বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এ কর্মসূচি নয়। আমরা শুধু আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। রাজনৈতিক কোনো দলও এখানে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করবে না।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের চিকিৎসা সেবা প্রদান করাটা আমাদের নেশা এবং পেশা। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেও আমরা আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আপনাদের সেবা নিশ্চিত করে গিয়েছি। আপনাদের সেবা দিতে আমরা ভালোবাসি, তাই আমরা কর্মবিরতিতে যেতে চাই না, কিন্তু আমাদের বাধ্য হয়েই যেতে হচ্ছে। কারণ চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা শুধু আমাদের জন্যে না, রোগীদের জন্য তথা দেশবাসীর জন্যেও জরুরি।