শেরপুর শহরের গৌরীপুর ও খোয়ারপাড় মহল্লাবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আরও এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ওই সংঘর্ষে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে সংঘর্ষের পর গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রাবণ নামে এক যুবককে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে রাতে ঢাকা মেডিকেলে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত শ্রাবণ গৌরিপুর মহল্লার মিন্টু মিয়ার ছেলে এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এর আগে সোমবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় গৌরীপুর মহল্লার বাসিন্দা হাফেজ আজাহার আলীর ছেলে ট্রলি শ্রমিক মিজান মিয়া (৩৫) নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ২০ জন। তাদের শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর মোড়ের আধিপত্য নিয়ে স্থানীয়ভাবে দুটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দ্বন্দ্বের জেরে গত কয়েকদিন ধরে গৌরীপুর ও খোয়ারপাড় মহল্লাবাসীর মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। একপর্যায়ে খোয়ারপাড় মোড়ে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ালে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় উভয়পক্ষ এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে খোয়ারপাড় মোড়ের খাবারের হোটেলসহ কয়েকটি দোকান লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের হামলায় মিজান ও শ্রাবণসহ উভয়পক্ষের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়। আহতদের মধ্যে মিজানকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর অবস্থায় রাতেই শ্রাবনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকা মেডিকেলে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু ঘটে। রাতভর দুই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করে।
এদিকে, মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উভয়পক্ষ মুখোমুখি সংঘর্ষে না জড়ালেও এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ টহল জোরদার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। নিহত মিজান ও শ্রাবণের জানাজা শেরপুর পৌর শহরের মৈত্রী বাড়ি মাঠে বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে।
শেরপুর সদর থানার ওসি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দুই মহল্লাবাসীর সংঘর্ষে দুজন নিহত এবং কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে।