বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল্লাহ আল আবির নামে এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় হওয়া হত্যা মামলায় আটক ব্যবসায়ী তানভীর আলী রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছে গুলশান থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুমিন মিয়া জানান, গত ১৯শে জুলাই বিকাল সাড়ে ৩টায় গুলশানের কালাচাঁদপুর এলাকার বারিধারা পার্ক রোডে আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। সেই হামলায় শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আবির ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ডিজিস্টসহ সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পরদিন ২০ জুলাই সকালে ডিজিস্ট ও আবিরের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় গত ২০ আগস্ট হাসান মাহমুদ নামে একজন বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গত শনিবার ওই মামলার অন্যতম আসামি ব্যবসায়ী তানভীর আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হয়। তখন আদালত তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, রিমান্ডে নেওয়ার পর তানভীর আলী বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। আন্দোলন দমাতে অর্থ, অস্ত্র ও সন্ত্রাসী দিয়ে সহায়তা দেওয়ার কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। তাকে আবারো রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মামলা ও হত্যা সম্পর্কে আরও প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যেতে পারে।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদ আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আবির হত্যা মামলায় তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে গুলশানের ব্যবসায়ী তানভীর আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
ওসি জানান, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল আবির হত্যা মামলাসহ আরও বিভিন্ন বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তানভীর আলীর বিরুদ্ধে বিগত ১৫ বছর ধরে ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ অর্থ উপার্জন, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলা চলমান রয়েছে। একাধিক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও ছিল এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে।
এর আগে অবৈধ অর্থ উপার্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন একাধিকবার নোটিশ দিলেও তিনি হাজির হননি। সম্প্রতি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত থাকার দায়ে তাকে ১ নম্বর আসামি করে গুলশান থানায় মামলা দায়ের হয়। সেই মামলাতেই গত শনিবার গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলাটিতে তানভীর আলী ছাড়াও স্থানীয় ১৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল, ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিমুল, গুলশান থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আনিসুর রহমান সুজন, সাধারণ সম্পাদক মানিক, প্রচার সম্পাদক সোহাগ, গুলশান শ্রমিক লীগের মো. মহসিন আরো দেড় থেকে দুইশো জনকে আসামি করা হয়েছে।