লক্ষ্মীপুরে গ্রিন লিফ ফিলিং স্টেশন থেকে বাসে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে তিনজন নিহতের ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জেলা প্রশাসক (ডিসি) রাজীব কুমার সরকার বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। তদন্ত কমিটিকে আগামী ৫ কর্মদিবসের ভেতরে রিপোর্ট করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করে নিহতদের পরিবার ও আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন ডিসি। এসময় নিহত তিনজনের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। আহতদের তালিকা করে তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণের আশ্বাস দেন ডিসি।
ডিসি বলেন, বাসে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্তকে প্রধান করে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, বাখরাবাদ গ্যাস বিভাগের কর্মকর্তা ও বিআরটিএ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিসির সঙ্গে ঘটনাস্থল লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ইসলাম মার্কেট এলাকার গ্রিন লিপ ফিলিং স্টেশন ও সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আকতার হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান প্রমুখ।
এদিকে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তিনজন সিএনজি চালিত অটোরিকশাচালক জানায়, বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি পুরাতন ও নিম্নমানের ছিল। এ কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিনজন ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। কয়েকজন হাত পা হারিয়েছেন। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা ও লক্ষ্মীপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গ্রিন লিপ সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কর্মী মো. হুমায়ুন বলেন, সিলিন্ডারে গ্যাস রিফিল করার সময় বাসটি কেঁপে ওঠে। এতে রিফিল কর্মী (নজেল ম্যান) দ্রুত গ্যাসের নজেল খুলে নেয়। সঙ্গে সঙ্গেই বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় আশেপাশে থাকা লোকজন আহত ও নিহত হয়। বিকট শব্দে পাম্পের বিভিন্নস্থানে থাকা কাচের গ্লাস ভেঙে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাসে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারের ত্রুটির কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ছাড়া ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিলেও তারা ঘটনার প্রায় একঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে যায়।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছে নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনজন ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্নমানের ছিল। এতে গ্যাস নেওয়ার সময় সিলিন্ডারটি বিস্ফোরণ ঘটে।
প্রসঙ্গত, রোববার (১৩ অক্টোবর) রাত দেড় টার দিকে রামগতি-লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী রুটের একটি বাস ফিলিং স্টেশন থেকে গ্যাস নেই। এরপর পরই বিকট গ্যাসের সিলন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে কারো পা ও কারো হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে অন্যরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।