যে কোনো পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের বিজয়কে আরও বৃহত্তর বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে গণতন্ত্র মঞ্চ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) রাজধানীর তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ ভবনে নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের সমন্বয়কারী মাহমুদুর রহমান মান্না এই প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘কনস্টিটিউশনের একেবারে ব্যাসিকলি অনেক কথাবার্তা শুরু হয়েছে। এটাকে খুবই যোগ্যতার সাথে সমাধানের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকার যদি এখন থেকে যথাযথ যত্নবান না হন, তাহলে সংকট বড় হতে পারে। আমরা মনে করি, এই সমস্যাও পার হওয়া সম্ভব। কিন্তু যদি ভুল হাতে পড়ে, ভুলভাবে এটাকে ব্যবহার করা হয় বা চেষ্টা করা হয়, তাহলে সেটা ক্ষতির কারণও হতে পারে। বর্তমান সরকার, সব স্টেকহোল্ডার, সচেতন মানুষসহ দেশবাসীর কাছে আবেদন করব- আমাদের এই বিষয়ের বিশাল অভ্যুত্থানের বিজয়কে আরও বৃহত্তর বিজয়ের দরজাতেই নিয়ে যেতে হবে। এখানে ব্যর্থ হবার সুযোগ নেই, হবারও কোনো কারণ নেই, যদি যোগ্যতা ও আন্তরিকতার সাথে এই কাজটা করতে পারি।’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে এই পর্যন্ত যেটাই হয়েছে সেটার মধ্যে যে খুব সঙ্গতি দেখতে পাচ্ছি, সেটাও নয়। সর্বশেষ সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের প্রস্তাব ছিল, ওনারাও এগ্রি করেছিলেন যে, সবার সাথে কথা বলেই তাদের প্রস্তাবনাটা তৈরি হবে। এখন মনে হচ্ছে- তা হচ্ছে না। তারা তাদের মতো করেই করছেন। আমাদের সাথে তো প্রথম থেকেই শুরু করতে হবে, সময় আরও বেশি লাগতে পারে।
দুই মাসেও অন্তর্বর্তী সরকারের আমলাতন্ত্রে বিগত সরকারের লোকজন বসে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মান্না বলেন, এটা ইতিহাস গ্রহণ করবে না। ছয় মাস পরে বলবেন যে, আমরা কিছুই করতে পারিনি, আর ছয় মাস পর্যন্ত তারা (বিগত সরকারের লোকজন) যা করার করবে; হাইকোর্টের মতো জায়গায় মিছিল করবে, এটা দেখার জন্যে মানুষ প্রস্তুত না।
তিনি বলেন, ১৫ বছর বিগত সরকার যেভাবেই হোক এতো অত্যাচার-নির্যাতন করেছে, মানুষ তাদের ওপর বিষে আছে। আমরা কোনো দলের প্রতি কোনো জাতি শত্রুতা করি না, কোনো দলকে বাদ দিয়েই করতে হবে সে রকমও বলি না। যখনই সরকার বলেন যে, অন্তর্ভুক্তিমূলক ইনক্লুসিভ সরকার করতে চাই, গণতন্ত্র যে নির্মাণ করবে সেটাও অন্তর্ভুক্তিমূলক করব- আমরা সেটাও গ্রহণ করতে রাজি আছি।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে সরকারকে ফেলে দেবার জন্যে, গণতন্ত্রের পথ ব্যাহত করবার জন্যে কাজ করবে- সেটার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবো না। তার মানে প্রশাসন হাতে নেই, পুলিশ হাতে নেই-কিছু করতে পারবে না। এই ব্যর্থতার দায় ইতিহাস তাদেরকেই দেবে। কারণ, তারা ক্ষমতায় আছে। এটা তাদের বুঝে নেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারকে আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান গণতন্ত্র মঞ্চের এই সমন্বয়কারী। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাচ্চু ভুঁইয়া, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।