হাতের কবজি দিয়ে লিখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সেই মিনারা খাতুনের ভর্তি নিশ্চিত করতে আশ্বাস দিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী।
মিনারা খাতুনের ভর্তির বিষয়ে উপাচার্য বলেন, সোমবার (২১ অক্টোবর) আমি মিনারার ভর্তির বিষয়ে কথা বলব। ইনশাআল্লাহ তার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
মিনারা খাতুন কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল দক্ষিণ বাঁধ এলাকার দিনমজুর মো. রফিকুল ইসলাম ও মৃত মর্জিনা বেগমের মেয়ে। দুই বোনের মধ্যে মিনারা ছোট।
জানা গেছে, জন্ম থেকেই দুই হাতে কোনো আঙুল নেই মিনারার। তবুও অদম্য ইচ্ছা শক্তি নিয়ে হাতের কবজির সাহায্যে লিখতে শেখেন তিনি। হাতের কবজির সাহায্যে লিখে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েও শুধু অর্থাভাবে স্বপ্নের বিদ্যাপীঠ বেরোবিতে ভর্তি হতে পারছেন না মিনারা। কিন্তু টাকার অভাবে ভেস্তে যেতে বসেছে তার শৈশবের ইচ্ছা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং পরের কয়েক বছর পড়ার খরচ যোগানোই এখন তার মূল চিন্তা।
এদিকে ২১ অক্টোবর বেরোবিতে ভর্তির শেষ দিন। ভর্তির শেষ সময় ঘনিয়ে এলেও ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ যোগান দিতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে মিনারার পরিবার।
জীবন যুদ্ধে হারতে নারাজ মিনারা। দুই হাতের আঙুল না থাকলেও, কবজির সাহায্যে লিখেই তিনি একে একে পিইসি, জেডিসি ও দাখিল পরীক্ষায় পাস করেন। পরে কারমাইকেল কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হন। ২০২২ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্সে ভর্তি হন। এবারে দ্বিতীয় বারের মতো পরীক্ষায় অংশ নিয়ে রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভর্তির সুযোগ পান মিনারা।
মায়ের মৃত্যুর পর সাতবার নদীতে বাড়িভাঙনের শিকার বাবা রফিকুল ইসলাম মিনারার খালাকে বিয়ে করেন। শারীরিকভাবে মিনারা স্বাভাবিক থাকলেও তার দুহাতে কোনো আঙুল নেই। দুই হাতের কবজির সাহায্যে কলম ধরে তিনি এখন পর্যন্ত পড়ালেখা চালিয়ে আসছেন।
এর আগে, রোববার (২০ অক্টোবর) ‘হাতের কবজি দিয়ে লিখেও বেরোবিতে চান্স, তবুও ভর্তি অনিশ্চিত মিনারার’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ হয়।