বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল পক্ষকে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের পরিধি বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীতে মশাল মিছিলপূর্ব এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ দাবি জানান তিনি।
পুরানা পল্টন মোড় সংলগ্ন আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মশাল মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, বিজয়নগর পানির ট্যাংকি মোড় ঘুরে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। আওয়ামী দুর্বৃত্তদের অতর্কিত গুপ্ত হামলার প্রতিবাদ এবং গণহত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রাশেদ খাঁন বলেন, শেখ হাসিনা কি এখনো প্রধানমন্ত্রী? রাষ্ট্রপতির কাছে শেখ হাসিনা পদত্যাগপত্র দিক বা না দিক, তাতে কী আসে-যায়? যে গণআন্দোলনের মুখে পালিয়ে গেছে, তার পদত্যাগের কিছু নেই। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে যে অপরাধ করেছে, তাদের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। সুতরাং আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। ভোটের রাজনীতির জন্য কোন দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমা করলেও জনগণ আওয়ামী লীগকে কোনো ক্ষমা করবে না। গণতন্ত্র রক্ষার নামে কেউ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আসার কথা বললেও জনগণ আওয়ামী লীগের মতো গণহত্যাকারী দলকে নির্বাচন করতে দিবে না।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার ইতোমধ্যে ব্যর্থ। তারা আওয়ামী পাণ্ডাদের এখনো আটক করতে পারছে না, পুলিশের মধ্যকার খুনিদের ধরছে না, নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। মানুষের আহাজারি বেড়েছে। সরকার কোনকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। কীভাবে পারবে? একজন ব্যক্তি ৩-৪টি মন্ত্রণালয় চালায়। হযবরল অবস্থা। কোন মন্ত্রণালয় ছেড়ে কোন মন্ত্রণালয় সামলাবে? সুতরাং উপদেষ্টা পরিষদের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সকল পক্ষকে নিয়ে এর পরিধি বাড়াতে হবে। এই সরকারের অধিকাংশ উপদেষ্টার এনজিও সেক্টরে ভাল অভিজ্ঞতা থাকলেও রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনীতিতে অভিজ্ঞতার ঘাটতি আছে, যে কারণে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন। কিন্তু তারা ব্যর্থ হোক আমরা চাই না। যে কারণে আমরা চাই, উপদেষ্টা পরিষদের পরিধি ২১ থেকে ৫১ করা হোক রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে।
গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগের নিয়োগকৃত আমলারা এখনও প্রতি বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছে। আপনাদের এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে। আওয়ামী লীগের নিয়োগকৃত রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্বে রেখে ছাত্র-জনতার অর্জিত বিজয় সুরক্ষিত নয়। রাষ্ট্রপতির গতকালের (রোববার) বক্তব্যের পর আজকে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ-যুবলীগ হামলা করেছে, ঢাকার গুলিস্তানে ছাত্রলীগ মিছিল করেছে। এগুলো স্বাভাবিক বিষয় নয়। এগুলো গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। ছাত্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে যেকোন প্রতিবিপ্লব মোকাবিলার জন্য।
আওয়ামী লীগসহ তার সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গর্ত থেকে বের হয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানান গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন।
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, গত ১৭ বছরে আওয়ামী লীগ যত গুম, খুন, হত্যা, লুটপাট, অর্থ পাচার করেছে সেসব এবং জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের গণহত্যার বিচার হওয়ার পর আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কিনা- এ দেশের জনগণ সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে। তার আগে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাতে পারবে না।
যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসানের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন, পেশাজীবী অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খালিদ হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, যুব অধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি হোসাইন নুর, শাকিল আহমেদ তিয়াস, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জাহাঙ্গীর হিরণ, উত্তরের সভাপতি মামুন শেখ প্রমুখ।