24 C
Dhaka
Thursday, November 21, 2024

শপথ নিলেন, মেয়র হলেন শাহাদাত

নির্বাচনের সাড়ে তিন বছর পর নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায়ে নির্বাচিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন শপথ নিয়েছেন।

রোববার সচিবালয়ে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

শপথ অনুষ্ঠান শেষে জুলাই আন্দোলনে হতাহতদের স্মরণ করে উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, “এ শপথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ শপথ অনুষ্ঠিত হলো বিপ্লবোত্তর সময়ে। …এ সরকার রুটিন কেয়ারটেকার সরকার নয়।

“গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ছাত্র, জনতা, শ্রমিক- তাদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রত্যাশা পূরণের জন্য আমানত হিসেবে এ সরকার গঠিত হয়েছে। আমরা ট্রাস্টি, বেনিফিসিয়ারি হচ্ছে সারাদেশের মানুষ।”

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন নৌকার প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন ধানের শীষ প্রতীকে পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।

আরো পড়ুন  পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, ভাঙলো যাত্রীর মোবাইল

ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে ফল বাতিল চেয়ে ওই মাসেই নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. শাহাদাত। সরকার পরিবর্তনের পর এ বছরের ১ অক্টোবর সেই মামলার রায়ে শাহাদাতকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন চট্টগ্রামের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ খাইরুল আমীন।

আদালতের রায় অনুযায়ী ইসি সচিবালয় ৮ অক্টোবর শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। এরপরই তাকে শপথ পাঠ করানো হলো।

নতুন মেয়রের কাছে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরতে গিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, “নতুন মেয়রকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা জানাই। স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- তিনি একটি বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের একটি প্রধান নগরীর মেয়র হয়েছেন। তার দায়িত্ব এ বিপ্লবের প্রত্যাশাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।

আরো পড়ুন  পুলিশে নিয়োগ হবে যোগ্যতার ভিত্তিতে : পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল

“পেছনের সব ধ্যান-ধারণা, চিন্তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ছাত্র-জনতা-শ্রমিকদের যে অর্জনের জন্য তাদের আত্মত্যাগ রয়েছে, সে প্রত্যাশা পূরণের জন্য বৈষম্যহীন শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় মেয়র শাহাদাত হোসেনের কাছে দেখতে চাই। আমি মনে করি, এ প্রত্যাশা চট্টগ্রামের প্রতিটি নাগরিকের। আমাদের প্রত্যাশা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের।”

চট্টগ্রামের সঙ্গে ৬০ বছরের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সেই গ্রিন সিটি দেখতে চাই। পাহাড় ঘেরা, জলাবদ্ধতামুক্ত সিটি দেখতে চাই।

“প্রত্যেকে নাগরিক সেবা পাচ্ছেন সেটা দেখতে চাই। চট্টগ্রামবাসীরও একই প্রত্যাশা।”

প্রবল আন্দোলনের মধ্যে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সব সিটি করপোরেশনের মেয়র, কাউন্সিলরদের অপসারণ করে প্রশাসক বসানো হয়েছিল। এখন কেবল চট্টগ্রাম সিটিতেই একজন মেয়র দায়িত্বে থাকলেন।

আরো পড়ুন  চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল | কালবেলা

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা জানান, চট্টগ্রামে কাউন্সিলর না থাকায় ১৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, যারা মেয়রের নেতৃত্বে কাজ করবেন। বাকি সিটি করপোরেশনগুলোতে শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ প্রশাসক বসানো হবে।

চট্টগ্রামের সিটি মেয়র হিসেবে প্রায় সাড়ে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছেন রেজাউল করিম চৌধুরী। পাঁচ বছর মেয়াদের বাকি সময় নতুন মেয়র শাহাদাত হোসেন দায়িত্বে থাকবেন বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ।

সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়ে পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার ভাবনার কথা জানিয়েছেন মেয়র শাহাদাত হোসেন।

শপথ নিয়ে তিনি বলেছেন, “চট্টগ্রাম বাঁচলেই বাংলাদেশ বাঁচবে।…কাজেই যদি চট্টগ্রাম শহরের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপ করা যায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

“এজন্য সবার সহযোগিতা কামনা করছি। গ্রিন সিটি, ক্লিন সিটি, হেলদি সিটি- এই নির্বাচনি ইশতেহার পূরণে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাব।”

সর্বশেষ সংবাদ