জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কুষ্টিয়া জেলায় ১১১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটিই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রথম জেলা কমিটি। পর্যায়ক্রমে অন্য জেলাগুলোতেও কমিটি গঠন করা হবে।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফেসবুক পেজে এই কমিটি প্রকাশ করা হয়। এর কিছুক্ষণ পর সেই পোস্টটি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। কমিটির বিজ্ঞপ্তিতে হাসনাত ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের স্বাক্ষর রয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঠিকানা হিসেবে লেখা হয়েছে ‘রূপায়ন টাওয়ার, ৩৪৫ দিলু রোড, ঢাকা-১২১২ ’।
কুষ্টিয়া জেলায় আগামী ছয় মাসের জন্য এই আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। ঘোষিত এই কমিটির আহ্বায়ক কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. হাসিবুর রহমান, সদস্যসচিব কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের মো. মোস্তাফিজুর রহমান। কমিটিতে মুখ্য সংগঠক হয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এম ডি বেলাল হোসেন এবং মুখপাত্র করা হয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পারভেজ মোশাররফকে। এ ছাড়া কমিটিতে ১০ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক, ১১ জনকে যুগ্ম সদস্যসচিব, ৭ জনকে সংগঠক ও ৭৯ জনকে সদস্য করা হয়েছে।
গত ১ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে টানা আন্দোলন শুরু হয়। পরে এই আন্দোলন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সেই আন্দোলনে আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটে। আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে গত ৩ আগস্ট সেটি বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্যের করা হয়।
এদিকে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সমন্বয়ক পরিচয়ে কিছু নেতিবাচক ঘটনা ঘটে। এর প্রেক্ষিতে গত ২২ অক্টোবর রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিজেদের ১৫৮ সদস্যের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত ঘোষণা করে। চার সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক, আরিফ সোহেলকে সদস্যসচিব, আবদুল হান্নান মাসউদকে মুখ্য সংগঠক ও উমামা ফাতেমাকে মুখপাত্র করা হয়।
শিগগিরই আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে উল্লেখ করে সেই সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়কেরা বলেছিলেন, ‘ভুয়া সমন্বয়ক পরিচয়ে কেউ যাতে অপকর্ম করতে না পারেন, সেই চিন্তা থেকে তাঁরা সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে চান। সেই লক্ষ্যে এই আহ্বায়ক কমিটি কাজ করবে। কমিটির প্রধান লক্ষ্যগুলোর মধ্যে থাকবে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করা ও মুজিববাদীদের সব অপতৎপরতার মূলোৎপাটন করা।