কোনো সরকারই কিন্তু শেষ সরকার নয়, মনে রাখতে হবে; আমাদের ক্ষেত্রে আমরাও শেষ সরকার ছিলাম না,” লন্ডনভিত্তিক একটি টেলিভিশন স্টেশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন তিনি।
দেশের ‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে’ প্রয়োজন হলে বিএনপির সঙ্গে একযোগে কাজ করার বিষয়ে তার দলের প্রস্তুত থাকার কথা বলেছেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
রোববার লন্ডনভিত্তিক ‘চ্যানেল এস’ টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “আমি বিএনপির সাথে অনেক ক্ষেত্রে একমত।
“এবং বিএনপি যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলছে, সেটির সাথে আমরা একমত এবং প্রয়োজনে বিএনপির সাথে একযোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য আমরা কাজ করব।”
ছাত্র-জনতার তুমুল গণ আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর হাছান মাহমুদের দেশ ছাড়ার খবর এসেছিল। তবে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের মন্ত্রী ও দলের সংসদ সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে তিনি কীভাবে বাইরে গেলেন, সেই প্রশ্ন রয়ে গেছে এখনও।
সরকার পতনের পরপরই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেছিলেন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো সাড়া আসেনি। দলটির নেতারা আওয়ামী লীগকে ‘ফ্যাসিবাদী’ আখ্যা দিয়ে তাদের প্রতিরোধের কথা বলছে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির বক্তব্যের ধারাও ইদানীং পাল্টেছে। নেতারা দ্রুত নির্বাচন চাইছেন। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এক এগারোর মত ‘মাইনাস টু’য়ের চেষ্টা সফল হবে না।
২০০৭ সালে সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে একযোগে আন্দোলন করার উদাহরণ টানেন হাছান মাহমুদও।
‘আওয়ামী লীগ: তটস্থ, হতাশ, কোণঠাসা?’ শীর্ষক এই আলোচনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দেন সাবেক এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ৫ অগাস্ট সরকার পতনের প্রায় তিন মাসের মাথায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো নেতার প্রথম কোনো সাক্ষাৎকার।
উপস্থাপক বুলবুল হাসানের সঞ্চালনায় ‘অভিমত’ নামের সাক্ষাৎকারভিত্তিক ওই অনুষ্ঠানে হাছান তার বর্তমান অবস্থান কোথায় তা জানাননি।
আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনামল, জুলাই-অগাস্টের ‘হত্যাকাণ্ড’, আওয়ামী লীগের ফিরে আসা, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ফখরুল-তারেকের অনেক বক্তব্যে ‘একমত’
ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপি ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সমালোচনা করে সংবাদমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই জায়গা করে নেওয়া সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী ওই নেতাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যের সঙ্গে ‘একমত’ হওয়ার কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা, জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ এবং সংস্কারের বিষয়ে তারেক রহমান ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য নিয়েও প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।