28 C
Dhaka
Sunday, September 29, 2024

তানাজের জিপিএ-৫ পাওয়ার খবর বাড়িয়ে দিল মা-বাবার শোক

ময়নসিংহ বোর্ড থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন শেরপুর শহরের নওহাটা এলাকার কুয়েতপ্রবাসী মোকাদ্দেসুর রহমান তোরাব ও মোছা. মনিরা বেগম দম্পতির বড় সন্তান মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজ। রোববার (১২ মে) প্রকাশিত ফলাফলে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। শুধুমাত্র বাংলা বিষয়ে এ গ্রেড, বাকি সব বিষয়েই এ প্লাস পেয়েছে সে। তবে এক সড়ক দূর্ঘটনার কারণে নিজের ফলাফল দেখে যেতে পারেননি তিনি।

তানাজের ফল প্রকাশের পর বাবা-মায়ের যন্ত্রণা যেন আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। মেয়ের ছবি জড়িয়ে বুক চাপড়ে কাঁদছেন মা। নির্বাক ভঙ্গিতে অঝোরে চোখের পানি ছাড়ছেন বাবা। কারণ, সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিয়েছে তাদের এই মেধাবী মেয়ের প্রাণ।

আরো পড়ুন  ফেনীতে মহাসড়কে বাস উল্টে নারী-শিশুসহ আহত ২০

জানা গেছে, মাশুরা নোকাদ্দেস তানাজ শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। গত ৩১ মার্চ তানাজের মামা কুয়েতপ্রবাসী সোহাবুর রহমান বাপ্পীকে বিমানবন্দর থেকে আনতে সপরিবারে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার জামান ফিলিং স্টেশনের সামনে একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী তানাজ ও তার ছোট ভাই আড়াই বছর বয়সী শিশু আনাছ। আহত হয় তাদের বাবা-মাসহ তিনজন।

আরো পড়ুন  মায়ের চোখের সামনে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হলো মেয়ে

এদিন তানাজের বাড়িতে যেয়ে দেখা যায়, ছেলে মেয়ে হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি মা-বাবা। এরই মধ্যে মেয়ের এতো বড় সাফল্য তাদের শোককে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ওই ঘটনায় আহত তানাজের মা মনিরা এখনো পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। স্মৃতি স্মরণ করে কেঁদেই চলেছেন অসুস্থ মা। অপরদিকে মেয়ের ছবি ও স্কুলের আইডি কার্ড বের করে অশ্রুসিক্ত চোখে বারবার হাত বুলিয়ে দেখছেন বাবা। মেয়েকে চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন ছিল তাদের। এক সড়ক দুর্ঘটনা তাদের সেই স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে।

তানাজের বাবা মোকাদ্দেসুর রহমান বলেন, আমার তানাজ খুবই মেধাবী ছিল। ওর ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হওয়ার। পড়াশোনার প্রতি ওর আগ্রহ আর মনোযোগ দেখে, আমরা ওকে চিকিৎসকই বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু একটি দুর্ঘটনা আমাদের ছেলে-মেয়ের সঙ্গে সব স্বপ্নও কেড়ে নিয়েছে।

আরো পড়ুন  ফেসবুক পোস্টে সিল মারা ব্যালটের ছড়াছড়ি

তানাজের বিষয়ে শেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আবু তারেক বলেন, তানাজ খুব মেধাবী ছাত্রী ছিল। সে খুবই শান্তশিষ্ট ছিল। তানাজ জেএসসিতেও জিপিএ-৫ পেয়েছিল। এবারের এসএসসি পরীক্ষাতেও সে খুব ভালো করেছে। ফল প্রকাশের পর তার সহপাঠীরাও তানাজকে স্মরণ করে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ