28 C
Dhaka
Sunday, September 29, 2024

‘আসামির সঙ্গে নামের মিল’, পুলিশ ধরে নিয়ে গেল কলেজছাত্রকে

গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামির সঙ্গে শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় মাদক মামলায় এক কলেজছাত্রকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। মায়ের নাম ও গ্রামের নাম আলাদা হলেও সোমবার ওই কলেজছাত্রকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ভুল বুঝতে পেরে মঙ্গলবার (১৪ মে) পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দিলে তার জামিন মঞ্জুর হয়।

ওই কলেজছাত্রের নাম ইসমাইল হোসেন (২১)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ফাজিলপুর গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। তার মাতার নাম মোসা. মনোয়ারা বেগম। ইসমাইল গোদাগাড়ী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের একাদশ শ্রেণীর মানবিক বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।

অপরদিকে, মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানার আসামির নাম ইসমাইল হোসেন (২০)। তিনি গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের লালবাগ হেলিপ্যাড গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে। তার মায়ের নাম বেলিয়ারা। আসামি ইসমাইল পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মাদক মামলায় আসামি হওয়ার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি ভারতের চেন্নাই গিয়ে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন।

আরো পড়ুন  দুই বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল বিজিবি, ‘আত্মরক্ষার্থে গুলি’, বলছে বিএসএফ

ভুক্তভোগী কলেজছাত্র ইসমাইল হোসেনের ভাই আব্দুল হাকিম রুবেল জানান, ‘গত রোববার (১২ মে) এশার নামাজের সময় গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই আতিকুর রহমান আমাদের বাড়িতে আসে। এসময় তিনি একটি মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখিয়ে আমার ভাই ইসমাইল হোসেনকে ধরে নিয়ে যান।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এসআইকে বার বার বলেছি, তার নামে কোনো মাদক মামলা নেই। এসময় আমার ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রও দেখানো হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানার সঙ্গে গ্রাম, মায়ের নাম ও বয়স মিল নেই সেটিও দেখিয়েছি। তারপরেও তাকে ধরে নিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’

আরো পড়ুন  মডেল মসজিদ নির্মাণে ঘুষ নিয়েছেন স্বামী, অভিযোগ স্ত্রীর

মামলার তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট রাত পৌনে ১১টার দিকে গোদাগাড়ীর মাদারপুর জামে মসজিদ মার্কেটের সামনে থেকে রাজমিস্ত্রি ইসমাইল হোসেনকে ৫০ গ্রাম হেরোইনসহ গ্রেফতার করে রাজশাহী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

ওই রাতেই তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা করেন ডিবির এসআই ইনামুল ইসলাম। এর পরের দিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর এক মাস পর গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ইসমাইল হোসেন জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি ভারতের চেন্নাই চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি তার পিতার সঙ্গে কাঠমিস্ত্রির কাজ করছেন। তার পিতা আব্দুল করিম ছয় বছর ধরে চেন্নাই রয়েছেন।

আরো পড়ুন  জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ইস্যুতে নতুন নির্দেশনা

এমন অবস্থায় ভুল আসামি ধরে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্র ইসমাইলের পরিবারের পক্ষ থেকে গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিনসহ পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। তবে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি আমলে নেয় গোদাগাড়ী থানা পুলিশ।

গোদাগাড়ী থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, ‘মূল আসামির সঠিক ঠিকানা পাওয়া গেছে। যাকে ভুল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তার জন্য আদালতে প্রতিবেদন পাঠানোর পর তার মঙ্গলবার বিকেলে তার জামিন মঞ্জুর হয়েছে।’

গোদাগাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল রানা বলেন, ‘ওসিকে বলা হয়েছে ঠিকানা নিশ্চিত হতে। কিভাবে এ ধরনের ভুল হলো তা তদন্ত করে দেখা হবে।’

সর্বশেষ সংবাদ