মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পে ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকায় স্বামীর বিরুদ্ধেই লিখিত অভিযোগ করেছেন স্ত্রী।
বুধবার (৩ জুলাই) সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াছী উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে, নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগে চাকরিরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামানের স্ত্রী রেজওয়ান আহমেদ খুশবু বিভিন্ন তথ্য প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি প্রসারের লক্ষ্যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে, ২০১৭ সালে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৬৬৪টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণে প্রকল্প নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীনে এই প্রকল্পের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পালন করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
দুদফায় মেয়াদ বাড়ানোর পরও প্রকল্প শেষ না হওয়ায় আরও দুবছরের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। আর শুরুতে নেয়া ৮৪২ কোটি টাকার প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
কিন্তু সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে বারবার অনিয়মের অভিযোগে ধর্মীয় এই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ প্রকল্পকে বিতর্কিত করে তোলে অনিয়মকারীরা।
এবার সরকারি অর্থ ব্যয়ে মডেল মসজিদ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের এক উপ-সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্তের স্ত্রী রেজওয়ানা হাসনাত খুশবু বলেন, ‘ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজে স্বামীর ঘুষ নেয়ার তথ্য পেয়ে বারবার অনুরোধ করেও তাকে দুর্নীতি থেকে সরাতে ব্যর্থ হয়েছি। এমনকি দুর্নীতিতে বাধা দেয়ায় আমার শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এ অবস্থায়, পরিবার ও দেশের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট দফতরে অভিযোগ করার কোনো বিকল্প ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের সময় অতি সাধারণ পরিবারের একজন সন্তান হলেও, বর্তমানে আমার স্বামীর রয়েছে বিলাসবহুল বাড়িসহ বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি। ঘুষ দুর্নীতি ছাড়া এটি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দুর্নীতির তদন্ত এবং আমার ওপর নির্যাতনের প্রতিকার চাই।’
ধর্মীয় এই প্রকল্পে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সময় সংবাদকে জানান মডেল মসজিদ প্রকল্পের পরিচালক নজিবুর রহমান।
এ পর্যন্ত সারা দেশে ৩০০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তিন দফায় বাড়ানো এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৬ সালের জুনে শেষ হবে।