চাঁদপুরে গত ছয় মাসে ঘর ছেড়েছেন ১৬৩ জন। এসব ঘটনায় গত ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত থানায় ১৬৩টি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। এর মধ্যে ১২৫ জনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তবে এসব নিখোঁজ ডায়েরির মধ্যে পরকীয়া ও প্রেম-ভালোবাসার কারণে ঘরছাড়ার সংখ্যাই বেশি। সব মিলিয়ে গড়ে প্রতি মাসে ২৭টি করে নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে বলে থানা সূত্রে জানা গেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য মতে, চাঁদপুরে শিশু, কিশোর-কিশোরী, বিবাহিত নারী, কলেজ শিক্ষার্থী, যুবক-যুবতী ও বয়ো-বৃদ্ধার নিখোঁজের ঘটনায় ১৬৩টি নিখোঁজ ডায়েরি করেছে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। নিখোঁজদের মধ্যে পরকীয়া ও প্রেম-ভালোবাসা এবং পারিবারিক কলহে ঘরছাড়া মানুষের সংখ্যা বেশি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় ঘর ছেড়েছে কথিত প্রেমিকযুগল। আবার পারিবারিক কলহেও অনেকে ঘর ছেড়েছেন। এমনকি ঘর ছাড়ার নেপথ্যে পরকীয়ার ঘটনাও রয়েছে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, গত ছয় মাসে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি ও উদ্ধার অভিযানের পর ৩৮টি নিখোঁজ ডায়েরি এখনো তদন্তাধীন। এরমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচয়, অতঃপর প্রেম, সবশেষে ঘর ছেড়ে পালানোদের সংখ্যা বেশি। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই পরকীয়া প্রেমিকরাও। স্বামী বিদেশে কিংবা পেশাগত কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগে স্ত্রী পালিয়ে গেছে অন্য পুরুষের সঙ্গে এমন সংখ্যাও কম নয়। সব মিলিয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি যেন কমছে না।
এ বিষয়ে চাঁদপুর পুরানবাজার মধুসূধন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গণেশ দাশ বলেন, বর্তমানে দেখা যাচ্ছে তরুণ সমাজ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ করেই শোনা যায় অমুককে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কাটায়। এ ব্যাপারে পরিবারের সদস্যদের বেশি সচেতন হওয়া দরকার।
চাঁদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ডা. পীযূষ কান্তি বড়ুয়া বলেন, ডিভাইসের অতিরিক্ত সহজলভ্যতা এর অধিকাংশ কারণ। এই ডিভাইসের অপব্যবহারের কারণে অনেক ক্ষেত্রে মেয়েরা প্রতারিতও হচ্ছে। তাই অপ্রাপ্তদের হাতে ডিভাইসের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ দরকার বলেও মনে করেন তিনি।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি মো. শেখ মুহসীন আলম জানান, প্রতিদিনই নিখোঁজের ডায়েরি হচ্ছে। মানসিক ভারসাম্যহীন, শিশু-কিশোরসহ প্রেম-ভালোবাসা ও পরকীয়ার ঘটনায় নিখোঁজ ডায়েরি বেশি হয়। পারিবারিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে এসব ঘটনা বেশি ঘটছে। এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার আগ্রাসনতো আছেই। এসব ক্ষেত্রে অভিভাবক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আরও সচেতন হতে হবে। তবে নিখোঁজ ডায়েরির বিপরীতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।