লিবিয়ার বেনগাজী থেকে ৩৫ বাংলাদেশি নৌকায় রওনা হয় ইতালির উদ্দেশে। তিন দিন ধরে না খেয়ে সাগরে ভাসতে থাকে। এমতাবস্থায় নৌকাটি যখন মাল্টা ও ইতালির জলসীমায় পৌঁছায়, তখন ওশান ভাইকিং চ্যারিটি জাহাজ তাদেরকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সময় সোমবার (২০ মে) ভোরে তাদের ভূমধ্যসাগরে নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ওই বাংলাদেশিরা তিন দিন ধরে সাগরে নৌকায় ভাসছিলেন। লিবিয়ার বেনগাজি থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন তারা। তাদের গন্তব্য ছিল ইতালির সিসিলি দ্বীপ।
ভোরের আলো ফুটতে শুরু করলে ওশান ভাইকিং উদ্ধারকারী দলের সঙ্গে যোগ দেয় আন্তর্জাতিক রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট। তাদের পানি, খাবার ও কম্বল দেওয়া হয়।
আতঙ্ক কাটছে না কিরগিজস্তানে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের
ওশান ভাইকিং চ্যারিটি জাহাজের তল্লাশি ও উদ্ধারকারী দলের গিয়ানিস এএফপিকে বলেন, অন্ধকারে ভূমধ্যসাগরে ঢেউয়ের মধ্যে নৌকা আকৃতির কিছু একটা আছে, এমনটা মনে হচ্ছিল। সেটি দেখেই তিনি বলছিলেন, ‘তোমাদের সাহায্য করতে আমরা চলে এসেছি।’
তিনি জানান, কাছে গিয়ে দেখতে পান ৩৫ জন পাশাপাশি ফাইবার গ্লাসের এক নৌকায় গাদাগাদি করে বসে আছেন। তাদের চোখমুখ বসা, থরথর করে কাঁপছেন, গায়ের কাপড় ভেজা, পা খালি, চোখ লাল।
ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (আইআরএফসি) অপারেশনস ব্যবস্থাপক সারা মানসিনেলি বলেন, তারা এখানে নিরাপদে আছেন। তাদের লিবিয়ায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে না বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। যদিও তারা বারবারই আমাদের জিজ্ঞেস করছিলেন, আপনারা কি আমাদের লিবিয়ায় ফেরত পাঠাচ্ছেন? তাৎক্ষণিকভাবে তারা বুঝতে পারেননি আমরা কারা। তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
জাহাজটি এখন ইতালির অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলীয় ওরতোনা বন্দরে যাচ্ছে। যাত্রা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই অনেকে ঘুমিয়ে পড়েন বলেও জানান উদ্ধারকারীরা।
ইতালি সরকারের নীতি অনুযায়ী, উদ্ধারকারী জাহাজগুলো একই সময়ে একটি অভিযানে অংশ নিতে পারবে এবং এরপর সোজা নির্ধারিত বন্দরে চলে যেতে হবে। জাহাজটি ওরতোনায় পৌঁছাতে আরও দুই দিনের বেশি সময় লাগবে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে মধ্য ভূমধ্যসাগরে ৬২২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন বা নিখোঁজ হয়েছেন। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য রুটটিকে সবচেয়ে বিপজ্জনক বলে নিশ্চিত করেছে সংস্থাটি।