প্রকৃতিতে বাসস্থানের বিস্তৃতিতে বাড়ছে নানা প্রজাতির প্রাণীর বিলুপ্তি। প্রাণীদের এ আবাসস্থল অবক্ষয়ের প্রধান কারণ কৃষি, শহুরে বিস্তৃতি, খনি ইত্যাদি। পরোক্ষভাবে অন্যতম কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো। এছাড়াও, কীটনাশকের ক্রমবর্ধমান বিষাক্ততা একটি প্রজাতিকে খুব দ্রুত মেরে ফেলে। যে কোনো মহামারি একটি প্রজাতি বিলুপ্ত করে দিতে পারে। এ ছাড়াও কোনো প্রাণী বিলুপ্তির পেছনে অতিরিক্ত শিকারেরও প্রভাব রয়েছে।
এমনই বিলুপ্ত হওয়া নিউজিল্যান্ডের ওয়াটেলবার্ড প্রজাতির একটি পাখির নাম হুইয়া। এ পাখি বিলুপ্তির ইতিহাস দীর্ঘ। সর্বশেষ দেখা যায় ১৯০৭ সালে। ধারণা করা হচ্ছে, ১৯২০–এর দশক পর্যন্ত এ পাখি জীবিত ছিল।
সুদর্শন আর চমৎকার গানের গলা ছিল হুইয়ার। যা মুগ্ধ করত পথচারীদের। দেখতে গায়ের রং ছিল কালো। তবে লম্বা লেজের শেষ অংশ ছিল সাদা ছোপ। যা আকৃষ্ট করত সবাইকে।
ধর্মীয় বিশ্বাসেও এ পাখির ছিল কদর। বিশেষ করে মাওরিদের কাছে হুইয়া ছিল পবিত্র পাখি। গোত্রপ্রধান এবং মর্যাদাশালী ব্যক্তিরাই কেবল এ পাখির পালক পরিধান করতে পারতেন। মূলত ইউরোপীয়দের আগ্রাসী মনোভাবে পাখিটির বিলুপ্তি ঘটে। কারণ নিউজিল্যান্ডে ইউরোপীয়রা আসার পর হুইয়া পাখি শিকার বেড়ে যায়।
এ হুইয়া পাখির একটি পলক নিউজিল্যান্ডে বিক্রি হয়েছে ২৮ হাজার ৩৬৫ মার্কিন ডলারে (৪৬ হাজার ৫২১ নিউজিল্যান্ড ডলার)। যা প্রমাণ করে বিলুপ্ত হওয়া এ পাখির পালকটি কতটা বিরল ও মূল্যবান। এছাড়াও নিলামে এখন পর্যন্ত যত পাখির পালক বিক্রি হয়েছে, তার মধ্যে এটি সবচেয়ে দামি পালক এটি।
উল্লেখ্য, নিউজিল্যান্ডে বিক্রি (নিলামে) হওয়া এ পাখির পালকটির ওজন ছিল ৯ গ্রাম। ফলে দেখা যাচ্ছে যে, এটি সোনার চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। গোল্ড ব্রোকার থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে, প্রতি গ্রাম সোনার দাম এখন ১২৭ মার্কিন ডলার। সেখানে প্রতি গ্রাম হুইয়া পাখির পালকের দাম পড়েছে ৫ হাজার ১৬৯ মার্কিন ডলার। যদিও হুইয়া পাখির পালকটি কোথায় পাওয়া গেছে তা জানা যায়নি।