প্রায় ৪০ বছর আগে ভারত হয়ে বাংলাদেশে ঢোকেন বীর বাহাদুর রায় (৬০) নামে এক নেপালের নাগরিক। এর মাঝে বাংলাদেশের বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে প্রায় ১০ বছর কাজ করেন।
এরপর প্রায় ৩০ বছর ধরে বাংলাদেশের বগুড়ার দুপচাঁচিয়া এলাকার অলক বসাকের চাতালে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। ৪০ বছর পর পরিচয় শনাক্ত হলে অবশেষে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় নিজ দেশে পরিবারের কাছে ফিরেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে সকল আইনি প্রক্রিয়া শেষে বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত হয়ে নিজ দেশে ফিরে গেলেন বীর বাহাদুর রায়। তিনি নেপালের গোরখে বাঙ্গিনা এলাকার মৃত.অধীর চন্দ্র রায়ের ছেলে।
বীর বাহাদুর রায়কে স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের সময় এক আবেগঘন মুহূর্তের তৈরি হয়। স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেয়া বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুর রায়।
জানা গেছে, বাংলাদেশি স্থানীয়দের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তার পরিচয় শনাক্ত হয়। পরিবার ও স্বজনরা যোগাযোগ করলে বাংলাদেশে অবস্থানকালে বীর বাহাদুর রায়ের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না থাকায় গত ১৬ মে বাংলাদেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে নেপালি নাগরিক বীর বাহাদুর রায়কে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দেয়া হয়। আইনি জটিলতা নিরসন শেষে বৃহস্পতিবার বিকেলে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে তাকে তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি, নেপালের দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত মিস ললিতা সিলওয়াল, দ্বিতীয় সচিব মিস ইয়োজানা বামজান ও সেক্রেটারি অব এম্বাসেডর রিয়া ছেত্রী, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান, বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের উপপরিদর্শক (এসআই) ও ইনচার্জ অমৃত অধিকারী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা।
কথা হয় বীর বাহাদুরের ভাতিজা রাজন রায়ের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব কৃতজ্ঞ বাংলাদেশের মানুষ ও প্রশাসনের প্রতি। তারা আমার কাকাকে পরম যত্নে রেখেছিলেন। এজন্য তেঁতুলিয়া প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি সময় সংবাদকে বলেন, ‘প্রায় ৪০ বছর আগে বীর বাহাদুর রায় বাংলাদেশে আসেন। পথ ভুলে নেপালে আর ফেরত যেতে পারেন নি। তার এ অবস্থানকালে কোনো প্রকার মামলা কিংবা বিরুপ কোনো তথ্য না পাওয়ায় তাকে স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দিলে বিকেলে তাকে উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় তার স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’