দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় সাম্প্রতিক সময়ে আলোচনায় সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। এবার তাদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আজিজ আহমেদ ও বেনজীর আহমেদ নিয়ে করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মুখপাত্র ম্যাথু মিলার।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশে দুই ধরনের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা পুলিশপ্রধানের ব্যাপক দুর্নীতির খবর প্রকাশ হয়েছে। আপনি কি বলতে পারবেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংস্থা বেনজীরের সম্পদ পরীক্ষা করে অন্য কোনো দেশে পেয়েছে কিনা ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পদ জব্দ করেছে কিনা? আর সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ সম্পর্কে আপনার কাছে কি কোনো তথ্য আছে? কারণ আপনি সম্প্রতি ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। আপনি কী শাসকগোষ্ঠীর শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন? কেন এই ব্যক্তিরা অবাধে সবকিছু করে যাচ্ছেন?
জবাবে ম্যাথু মিলার বলেন, আপনি যেসব অভিযোগ ও সংবাদমাধ্যমের যেসব প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছেন, সে সম্পর্কে আমি জানি। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, দুর্নীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দেয়, উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে, সরকারকে অস্থিতিশীল করে ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা শুরু থেকেই দুর্নীতিবিরোধকে একটি ‘মূল জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থে’ পরিণত করেছি। এই কৌশলটির জন্য আমাদের বিশদ বাস্তবায়ন পরিকল্পনা বেশ কয়েকটি ঊর্ধ্বতন স্তরে প্রকাশ করা হয়েছে। আমার নতুন করে বলার মতো কিছু নেই। আপনি যেমন জানেন, আমরা কখনোই নিষেধাজ্ঞা বা অন্যান্য পদক্ষেপের বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলি না।
এ সময় সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, জার্মানভিত্তিক ডয়চে ভেলে এবং সুইডেনভিত্তিক নেত্র নিউজের যৌথ অনুসন্ধানে জানা গেছে- র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়মিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী হিসেবে মোতায়েন করা হয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের জন্য হতে পারে। র্যাবের কর্মকর্তাদের জাতিসংঘের মিশনগুলোতে মোতায়েন করা হচ্ছে, এ নিয়ে আপনি কতটা উদ্বিগ্ন। যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য তহবিল দেয়, প্রায় ২৭ শতাংশ তহবিল মার্কিন করদাতাদের অর্থ থেকে?
জবাবে মিলার বলেন, আমরা এসব প্রতিবেদন সম্পর্কে জানি। শান্তিরক্ষা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের মানবাধিকার রক্ষা করা অপরিহার্য। জাতিসংঘের ডিউ ডিলিজেন্স পলিসি অনুসারে, জাতিসংঘ এমন দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে, যারা মানবাধিকার লঙ্ঘন বা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত সেনা বা পুলিশ পাঠাচ্ছে না।