27 C
Dhaka
Tuesday, July 2, 2024

৪১ বছর ইমামতি শেষে ইমামকে রাজকীয় বিদায়

নাটোরের বাগাতিপাড়ায় ৪১ বছর ইমামতি শেষে মসজিদের ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে চড়িয়ে রাজকীয় বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। বিদায়বেলায় মসজিদের ইমামকে সম্মানিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় প্রশংসায় ভাসছেন এলাকাবাসী। শুক্রবার (৩১ মে) বাদ জুমা উপজেলার বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের জিগরীর ক্ষিদ্রমালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম মো. মুনছুর রহমানের (৭৫) সম্মানে আনুষ্ঠানিকভাবে এমন বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

ইমামের বিদায়বেলায় উপস্থিত মুসল্লিরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এমন রাজকীয় সংবর্ধনা পেয়ে আবেগ আপ্লুত ইমাম সকলের জন্য দোয়া করেছেন।ইমাম মো. মুনছুর রহমান বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা।

এলাকাবাসী জানান, ১৯০১ সালে ওই মসজিদটি স্থাপিত হয়। এরপর ১৯৮৩ সাল থেকে মো. মুনছুর রহমান ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ৪১ বছরে তার দায়িত্বের সময়ে মসজিদটির প্রায় সকল উন্নয়ন হয়েছে। ইমাম মুনছুর রহমানের বর্তমান বয়স ৭৫ বছর। নিজে থেকে স্বেচ্ছায় ইমামের দায়িত্ব পালন থেকে অব্যাহতি চাওয়ায় এলাকাবাসী তার সম্মানে তাকে সংবর্ধনা দেন। বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ইমামকে দেওয়া হয় ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা ও বিভিন্ন উপহার সামগ্রী। পরে তাকে ঘোড়ার গাড়িতে করে রাজকীয় বিদায় দেওয়া হয়। এ সময় এলাকার মুরব্বিসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রিয় ইমামকে ঘোড়ার গাড়িতে করে তার বাড়ি উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আসেন।

আরো পড়ুন  প্রবাসীর স্বর্ণ ছিনতাইকালে আটক পুলিশের এসআই

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. সেলিম রেজা জানান, এলাকবাসীর এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। তিনি এ রকম আয়োজন এর আগে কখনও দেখেননি। এ রকম আয়োজন করায় তিনি এলাকাবাসীকে ধন্যবাদ জানান।

ক্ষিদ্রমালঞ্চি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সভাপতি আরশেদ আলী জানান, ইমাম মুনসুর রহমান দীর্ঘ ৪১ বছর তাদের মসজিদে ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সবার সাথে মিশে ছিলেন। গ্রামবাসী তার পরামর্শ নিয়ে কাজকর্ম করতেন। তিনি ছিলেন সবার অভিভাবকের মতো। গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে তার পরামর্শ নেওয়া হতো।

আরো পড়ুন  শেষ কর্মদিবসে বেআইনিভাবে দলিল রেজিস্ট্রি

তিনি বলেন, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সরকারি কর্মকর্তাসহ বেশিরভাগ পেশাতেই বিদায়বেলায় সবাই সংবর্ধনা দেয়। কিন্তু ইমামরা, যাদের সবচেয়ে বেশি সম্মান দেওয়ার কথা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের বিদায় আনন্দের হয় না‌। আমরা চাই সকল ইমাম যাতে তাদের বিদায়বেলায় সম্মানজনকভাবে বিদায় নেয়। এই আয়োজন দেখে সবাই যেন উদ্বুদ্ধ হয়।

ইমাম মো. মুনছুর রহমান জানান, জীবনের দীর্ঘ সময় তিনি এই মসজিদে ইমামতি করেছেন। সুখে-দুঃখে সব সময় গ্রামবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সামাজিক কর্মকাণ্ডেও নিজেকে জড়িয়ে রেখেছিলেন।

আরো পড়ুন  ধানক্ষেতে কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করল বোন জামাই

তিনি বলেন, জীবনের বেশিরভাগ সময় যাদের ইমামতি করেছি, যাদের পাশে ছিলাম, বিদায়বেলায় তাদের এমন আয়োজনে অনেক আনন্দিত আমি। সবার জন্য অনেক দোয়া করব। আমার জন্যও সবাই দোয়া করবেন।

সর্বশেষ সংবাদ