খুলি-নিয়ে-টানাটানি-করছিল-কুকুর-বস্তায়-মিলল-টুকরো-টুকরো-মাংসটুকরো টুকরো করা বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে স্থানীয়দের ভীড়। ইনসেটে নিখোঁজ শিশু নওশীন ইসলাম শর্মিলা।
শর্মিলার বাবা সুমন মিয়া বলেন, ‘গত ২৬ মে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শর্মিলা। পরে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ সকালে কুকুরে মাথার খুলি টানাটানি করছিল। পরে খবর শুনে এখানে আসি। বস্তা থেকে যে জামা পাওয়া গেছে সেটি নিখোঁজের সময় আমার মেয়ের পরণে ছিল।’
একটি প্লাস্টিকের বস্তা পড়েছিল ধানক্ষেতে। সেই বস্তাটি কিছু কুকুর দল বেঁধে টানাটানি করছিল। এমন সময় বস্তা থেকে বেরিয়ে আসে মানবদেহের পচে যাওয়া টুকরো টুকরো কিছু মাংস এবং হাড়ের খণ্ড খণ্ড অংশ।
বস্তাটি টানাটানি দেখে ঘটনাস্থলে তাৎক্ষণিক উৎসুক জনতার ভিড় লেগে যায়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখতে পায়, বস্তাবন্দি কোনা এক শিশুর মরদেহ।
সোমবার দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলিয়াপাড়া এলাকার একটি ধানক্ষেত থেকে বস্তাবন্দি মরদেহের খন্ড খন্ড অংশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার ও ভূঞাপুর থানার ওসি মো. আহসান উল্লাহসহ পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল মাংসের টুকরোগুলো। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল চারদিকে। স্থানীয়রা বিষয়টি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
তারা জানান, ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরেই বাড়ির সামনে থেকে ৯ দিন আগে নিখোঁজ হয় মো. সুমন মিয়ার ১০ বছরের মেয়ে নওশীন ইসলাম শর্মিলা। গত ২৬ মে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে।
স্থানীয়দের ধারণা, মাথার খুলিটি হয়ত ওই শিশুর। তবে দেহের অন্যান্য অংশের এখনও কোনো সন্ধান মেলেনি।
কুপিয়ে জখম, স্থানীয়দের গণপিটুনিতে সন্ত্রাসীর নিহত
স্থানীয়দের ধারণা, দুর্বৃত্তরা হত্যার পর মরদেহ গুম করার জন্য হয়তো বস্তাবন্দি করেছিল। তারা পুলিশকে এ ব্যাপারে তদন্তের অনুরোধ জানান।
শর্মিলার চাচা কাইয়ুম মিয়া বলেন, ‘সোমবার সকালে বাড়ির পাশের ধানক্ষেতে কিছু কুকুর একটি বস্তা টানাটানি করে সমস্ত মাথার খুলি বের করে দেহ লন্ডভন্ড করে ফেলে। দেহের হাড়গোড়ও ছিল খন্ড খন্ড। মরদেহ দেখে চেনার কোনো উপায় নেই, সেটি কার মরদেহ। এটি শর্মিলার মরদেহ কি না, আমরা এখনও নিশ্চিত না। তবে তার পড়নের লাল পাজামার অংশ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, এটি শর্মিলারই মরদেহ হবে।’
শর্মিলার বাবা সুমন মিয়া বলেন, ‘গত ২৬ মে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফিরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শর্মিলা। পরে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। থানায় জিডিও করেছি। যেখানে খুলি পাওয়া গেছে, ওই জায়গা দিয়েও কয়েকবার খোঁজাখুঁজি করা হয়েছে, কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। আজ সকালে কুকুরে মাথার খুলি টানাটানি করছিল। পরে খবর শুনে এখানে আসি। বস্তা থেকে যে জামা পাওয়া গেছে সেটি নিখোঁজের সময় আমার মেয়ের পরণে ছিল।’
এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানার ওসি মো. আহসান উল্লাহ্ বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। ফরেনসিক টিমকে খবর দিলে তারা এসে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘মাথার খুলির ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। পরে জানা যাবে মাথার খুলিটি নিখোঁজ শিশু শর্মিলার কিনা। এ নিয়ে আমাদের তদন্ত চলছে।’
টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, দ্রুতই এর রহস্য উদঘাটন করা হবে।