19 C
Dhaka
Tuesday, December 10, 2024

‘ভোলে বাবার’ গাড়ির ধুলা নিতে গিয়েই এত মানুষের মৃত্যু?

ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরাস জেলায় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদদলিত হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১ জনে। বুধবার (৩ জুলাই) স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান। কীভাবে এত মানুষের মৃত্যু হলো তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেলে হাথরাস জেলার রতি ভানপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ধর্মীয় ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত এক ধর্মগুরু। তার অনুসারীরাই ওই আয়োজনে গিয়েছিলেন। তবে ঘটনার পর থেকে ভোলে বাবার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

উত্তর প্রদেশের মুখ্য সচিব মনোজ কুমার সিং বলেন,
পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনার পেছনে বড় একটি কারণ প্রচণ্ড ভিড়। অনেকেই ভিড়ের মধ্যে ভোলে বাবার গাড়ির পেছনে দৌড়াচ্ছিলেন। তিনি যে পথে হাঁটেন, পূজা করার জন্য সেই পথের মাটি সংগ্রহ করেন অনেকে। এ কারণে একের পর এক মানুষ পড়ে গিয়ে পদদলিত হন।

আরো পড়ুন  দোদুল্যমান রাজ্যগুলোতেই কপাল পুড়ছে কমলা হ্যারিসের

এর আগে পুলিশের বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, খুব ছোট একটি জায়গায় ‘সৎসঙ্গ’ নামে ধর্মীয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। অল্প জায়গায় বহু মানুষের ভিড়ে দমবন্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অনুষ্ঠানস্থলে নিঃশ্বাস নিতে না পারায় ‘সৎসঙ্গে’ উপস্থিত লোকজনের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হচ্ছিল।

এরপর লোকজন সেখান থেকে সরে যেতে তাড়াহুড়ো শুরু করলে পদদলনের ঘটনা ঘটে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অনুষ্ঠানের সময় আবহাওয়া খুব বেশি গরম ও আর্দ্র ছিল। তবে সেখানকার পরিস্থিতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেল এবং এ পদপিষ্টের ঘটনা ঘটল, তা পুরোপুরি স্পষ্ট নয়।

আরো পড়ুন  নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নন রাইসির স্ত্রী

এদিকে, এ ঘটনায় একটি এফআইআর করা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ধর্মীয় ওই আয়োজনে ৮০ হাজার মানুষ জড়ো হবে বলে অনুমতি নেয়া হয়েছিল। কিন্তু জমায়েত ছিল আড়াই লাখের বেশি মানুষের।

উত্তর প্রদেশে পদদলিত হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়েছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও লোকসভার বিরোধী দলের নেতা রাহুল গান্ধী।

কে এই ‘ভোলে বাবা’

আলোচিত এই ‘ভোলে বাবা’ নারায়ণ সরকার হরি নামেও পরিচিত। যদিও এটি তার আসল নাম নয়। তার আসল নাম সুরাজ পাল। উত্তরপ্রদেশের ইতাহ বিভাগের বাহাদুর নগরী গ্রামে তার জন্ম। সেখানেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা নেন। তার দাবি, কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে গোয়েন্দা বিভাগে কাজ শুরু করেন তিনি।

এ বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, ‘ভোলে বাবা’ প্রায়ই তার ভক্তদের কাছে দাবি করেন তিনি গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার সময়ই আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকে পড়ায় ১৯৯০ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন।

আরো পড়ুন  এবার গাজার যোদ্ধাদের নেতৃত্ব দেবেন যিনি

নারায়ণ সরকার হরির অন্যতম বিশেষত্ব হলো ভারতের অন্যান্য কথিত ধর্মগুরুর মতো জাফরান রঙের পোশাক পরেন না তিনি। এর বদলে পরেন সাদা স্যুট এবং টাই। এছাড়া তার পছন্দের তালিকায় রয়েছে কুর্তা-পায়জামা।

ভক্তদের কাছে কথিত এ ধর্মগুরু বলেন, ভক্তরা তাকে যে অর্থ দান করেন, তার কিছুই নিজের জন্য না রেখে বরং সবটাই তার অনুসারীদের পেছনে ব্যয় করেন তিনি। শুধু তাই নয়, নিজেকে ভগবান হরির শিষ্য বলে অভিহিত করেন তিনি। পাশাপাশি দাবি করেন, উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে তার অনেক ভক্ত আছে।

সর্বশেষ সংবাদ