29 C
Dhaka
Thursday, September 19, 2024

চোরের মোবাইলে টাকা পাঠালেই ফিরে পাওয়া যাচ্ছে চুরি যাওয়া মিটার

নাটোরের গুরুদাসপুরে বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক বৈদ্যুতিক মিটার চুরি হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়ার ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে চোর চক্রের সদস্যরা। ফলে মিটার চুরি হলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ না করে চোরকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠালেই ফিরে পাওয়া যাচ্ছে চুরি হওয়া মিটার।

জানা গেছে, মোবাইলে টাকা পাওয়ার পর চোর চক্রের সদস্যরাই বলে দেয় মিটারের কোথায় আছে। শনিবার (০৬ জুলাই) দিনব্যাপী অন্তত ১৩জন মিটার গ্রাহক তাদের চুরি হওয়া প্রতিটি মিটারের জন্য পাঁচ হাজার টাকা চোরের দেয়া বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে মিটার ফেরত পেয়েছেন। এদিকে উপজেলার চাপিলা, নাজিরপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় চুরি হয়েছে বেশকিছু মিটার। ঘটনা স্বীকার করলেও ঠিক কতটি মিটার চুরি হয়েছে তার সঠিক তথ্য দিতে পারেনি বিদ্যুৎ অফিস।

আরো পড়ুন  গুলিবিদ্ধ স্বামীর চিকিৎসায় ৩ দিনের সন্তানকে বিক্রি করলেন মা

জানা গেছে, শুক্রবার (০৫ জুলাই) গভীর রাতে পৌর সদরের চাঁচকৈড় গাড়িষাপাড়া, বামনকোলা, গোপালের মোড়সহ বিভিন্ন এলাকার ৩৬টি মিটার চুরি হয়। চুরি যাওয়া মিটারের পাশে পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা হয় চিরকুট। সেখানে লেখা ছিল ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’। চিরকুটে থাকা নম্বরে কল করলে বিকাশে টাকা দাবি করা হয়। পরে টাকা দিলে কোথায় মিটার পাওয়া যাবে তার স্থান বলে দেয় চোরেরা। গ্রাহকদের অভিযোগ, চোর চক্রের সদস্যরা প্রকাশ্যে মোবাইল নম্বর দিয়ে গেলেও পুলিশ এবং বিদ্যুৎ অফিস তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।

গাড়িষাপাড়া মহল্লার ধান ব্যবসায়ী বাবলুর রহমান জানান, মিটার চুরির ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। শুক্রবার সকালে চাতালে এসে দেখি মিটার নেই। তবে মিটারের নিচে পলিথিনে মুড়িয়ে থাকা একটি চিরকুট দেখতে পাই। চিরকুটে লেখা ছিল- ‘চুরি যাওয়া মিটার ফেরত পেতে ফোন করুন’। এরপর নম্বরটিতে কল দিয়ে শনিবার দুপুরে মিটারটি উদ্ধার করি চাতালের পাশে থাকা একটি ঘরের গাদা থেকে।’

আরো পড়ুন  স্বামীর ফার্মেসিতে মিলল স্ত্রীর মরদেহ

অপর এক ভুক্তভোগী চাতাল ব্যবসায়ী রবিউল করিম জানান, ‘এর আগেও মিটার চুরি করে বিকাশে চার হাজার টাকা নিয়ে মিটার ফেরত দিয়েছিলো চোর। এবারো চোরের দেয়া নম্বরে পাঁচ হাজার টাকা পাঠিয়ে তার তথ্য মতে নদীর ধার থেকে মিটার খুঁজে পেয়েছি।’

স্থানীয় গ্রাহকরা জানান, ৩৬টির মধ্যে ১৩টি বাণিজ্যিক মিটার ফেরত পেয়েছেন তারা। কিন্তু মিটার প্রতি ৫ হাজার টাকা বিকাশ করতে হয়েছে চোরকে। প্রশাসনিকভাবে কোনো প্রতিকার না পেয়ে মিটার চোর চক্রের কাছে জিম্মি ভুক্তভোগীরা। ফলে বাধ্য হয়ে চোরের দেওয়া নম্বরে বিকাশে টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নিতে হয়।

আরো পড়ুন  পদ্মার চরে রাসেল ভাইপার আতঙ্ক, বাদাম তুলতে মিলছে না শ্রমিক

এ বিষয়ে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ গুরুদাসপুর জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মোমিনুর রহমান বিশ্বাস মিটার চুরির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘চোর চক্রের সদস্যরা মিটার চুরি করে বিকাশে টাকা নিয়ে আবার মিটার ফেরত দিচ্ছে। এ চক্রের হোতা যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে গ্রাহকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ অফিসের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।’ আর গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ উজ্জল হোসেন বলেন, মিটার চুরির ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

সর্বশেষ সংবাদ