সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, রাস্তায় আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন করা যায় না।
আন্দোলন না করে ক্লাসে ফিরতে শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।
বুধবার (১০ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখা সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। চার সপ্তাহ পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হবে বলেও জানান আদালত।
এসময় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘যারা আন্দোলন করছে তাদের মনেও ক্ষোভ আছে। তবে তারা যেটা করছে সেটা অ্যাপ্রিসিয়েট করার মতো না। রাস্তায় আন্দোলন করে রায় পরিবর্তন করা যায় না। আমরাও তো মানুষ, বিভিন্ন দিকে কথা বার্তা হচ্ছে, কিন্তু বিষয়টা সলভ করতে হবে।’
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন থেকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে, সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে সকাল-সন্ধ্যা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীসহ চাকরিপ্রার্থীরা। ইতোমধ্যে রাজধানীর, শাহাবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, সাইন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সাত কলেজের শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা। এতে প্রধান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
অন্যদিকে একই দাবিতে টানা সপ্তম দিনের মতো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে দেশের উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল (একাংশ) এর সাথে ঢাকার যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এর বাইরে চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি পূরণ না হলে সারা বাংলাদেশ অবরোধ করা হবে। আর যদি কোটা রাখতেই হয় তাহলে ৫ শতাংশের বেশি নয়।
নির্বাহী বিভাগ থেকে কমিশন গঠনের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতির স্থায়ী ও যৌক্তিক সমাধান করতে হবে জানিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ আহমেদ সময় সংবাদকে বলেন, ‘কোর্টে অর্ডার স্থগিত হলেও আন্দোলন থেকে সরবে না শিক্ষার্থীরা। আমাদের আন্দোলনে জনসমর্থন থাকায় লোকজন কম বের হয়েছে।’