আইফেল টাওয়ারের চেয়ে বড় একটি গ্রহাণু পাঁচ বছরের মধ্যে পৃথিবীতে আঘাত হানতে পারে। ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল শুক্রবার বিপর্যয়কর ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন ইউরোপীয় বিজ্ঞানীরা।
গবেষকরা ‘৯৯৯৪২ অ্যাপোফিস’ নামের গ্রহাণুটির উপর নজরধারী বাড়িয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে পৃথিবীকে সুরক্ষিত রাখতে প্রতিরক্ষামূলক যেসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা আরও জোরদার হবে। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি (ইএসএ) জানিয়েছে, নিরাপত্তা ও সুরক্ষার জন্য র্যাপিড অ্যাপোফিস মিশনের (রামসেস) প্রস্তুতিমূলক কাজের জন্য তহবিল ঘোষণা করেছে। এর আওতায় গ্রহাণুটির আকার, আকৃতি, ভর এবং এটি যেভাবে ঘোরে সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে একটি মহাকাশযান পাঠানো হবে।
মিশনটি অ্যাপোফিসের গঠন এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামোর পাশাপাশি এর কক্ষপথের উপরও নজরধারী করবে। পৃথিবীর ৩২ হাজার কিলোমিটার দূর দিয়ে যাওয়ার সময় গ্রহাণুটি হঠাৎ কীভাবে গতি পরিবর্তন করতে পারে তাও নজরে রাখবে যানটি। পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের মাত্র এক দশমাংশ দূর দিয়ে এটি ২০২৯ সালের ১৩ এপ্রিল শুক্রবার অতিক্রম করবে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ইএসএর স্পেস সেফটি কর্মসূচির প্রধান ড. হোলগার ক্র্যাগ বলেছেন, গত কয়েক হাজার বছরের মধ্যে কোনও গ্রহাণু পৃথিবীর এত কাছাকাছি আসেনি। আকাশ পরিষ্কার থাকলে, আপনি খালি চোখে এটি দেখতে পারবেন।’
গ্রহাণুটি টিভি সম্প্রচার, নেভিগেশন এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাসের জন্য ব্যবহৃত কৃত্রিম স্যাটেলাইটের চেয়েও কাছ দিয়ে পৃথিবী অতিক্রম করবে। এর ফলে এর প্রভাব পড়তে পারে এই ধরণীতে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে এর গতি ও আকৃতিও পাল্টে যেতে পারে। পৃথিবীর মহাকর্ষীয় টানের ফলে গ্রহাণুটির পৃষ্ঠে ভূমিধসের ঘটনাও হতে পারে।
৬ কোটি ৬০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে আঘাত হেনেছিল একটি গ্রহাণু। এর প্রভাবে সৃষ্ট বিপর্যয়ে ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। বছর কয়েক আগে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা অঙ্গরাজ্যের টানিস এলাকায় একটি ডাইনোসরের পায়ের জীবাশ্মের খোঁজ পেয়েছেন তারা। মনে করা হচ্ছে, গ্রহাণুর আঘাতের জেরে সে সময় ডাইনোসরটির মৃত্যু হয়েছিল। নতুন সন্ধান পাওয়া পা-টি থেসকেলোসরাস প্রজাতির একটি ডাইনোসরের। আর সেটি এতটাই অক্ষত রয়েছে যে এর ত্বকের অস্তিত্বও পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।