ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরাইলের চলমান হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)। শুক্রবার (২৪ মে) জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইসরাইলকে এ নির্দেশ দেন। খবর আল জাজিরার।
আইসিজের প্রধান বিচারপতি নওয়াফ সালাম বলেন, মার্চ মাসে আদালতের শেষ আদেশের পর থেকে রাফায় মানবিক পরিস্থিতির ‘আরো অবণতি হয়েছে’।
তিনি বলেন,
রাফায় মানবিক পরিস্থিতি এখন ‘বিপর্যয়কর’ হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। আদালত নিশ্চিত নয় যে গাজা উপত্যকায় বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ইসরাইল যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তা যথেষ্ট কি না। বিশেষ করে সম্প্রতি রাফা থেকে যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদের ঝুঁকি কমানোর জন্য যথেষ্ট পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। রাফায় সামরিক অভিযানের ফলে ফিলিস্তিনি জনগণ ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন।
রাফায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে নওয়াফ সালাম বলেন, ইসরাইলকে অবিলম্বে রাফায় সামরিক আক্রমণ বন্ধ করতে হবে। এই হামলা গাজার ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীর উপর আঘাত করতে পারে। সেখানে বসবাসকারীদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করবে এবং তাদের শারীরিক ধ্বংসও ডেকে আনতে পারে।
আইসিজে কর্তৃক আদেশকৃত ব্যবস্থা প্রয়োগের অগ্রগতি ইসরাইলকে এক মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মানবিক সহায়তা প্রবেশের জন্য ইসরাইলকে রাফা সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
সাত মাসের বেশি সময় ধরে গাজার বিভিন্ন অংশে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। ইসরাইলের আগ্রাসনে গাজায় এরই মধ্যে প্রায় ৩৬ হাজার নিরীহ ও নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার বেশিরভাগই নারী ও পুরুষ। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৮০ হাজার।
সম্প্রতি ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজার দক্ষিণ রাফায় হামলা জোরদার করেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাফায় ইসরাইলের হামলা বন্ধের দাবি নিয়ে আন্তর্জাতিক বিচারিক আদালতের দারস্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশটির কর্মকর্তারা বলেন, গাজায় ইসরাইল গণহত্যা চালাচ্ছে। অবিলম্বে এই গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
আদালতের বিচারকরা বলেছেন, ইসরাইল গাজার বাসিন্দাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে যেসব প্রতিশ্রতি দিয়েছে এবং রাফা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া ব্যবহার করছে সেটিতে তারা সন্তুষ্ট নন।
বিবিসি জানিয়েছে, যেন গাজার সাধারণ মানুষের অবস্থার আর অবনতি না ঘটে সেটা নিশ্চিত করতেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালত এই নির্দেশনা দিয়েছে।