দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক সম্মুখ যুদ্ধে হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। এ হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পশ্চিমা বিশ্বের কয়েকটি দেশ। এটিকে ইসরায়েলের জন্য বড় সাফল্য বলে মনে করছে তারা।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী তার মৃত্যুর বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে। তবে হামাস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। হামাস মন্তব্য না করলেও খবরটি বিশ্ব মহলে বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী প্রমাণ হিসেবে সিনওয়ারের মরদেহের ছবি প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া ঘোষণার আগে তার দাঁত ও ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফলাফলে আইডিএফ হামাস নেতার মৃত্যুর বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হয়।
এ বিষয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল সিনওয়ারের সাথে হিসাব মিটিয়েছে কিন্তু যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।
ঘটনাটিকে বড় সাফল্য হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্র। এক বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, সিনওয়ারের মৃত্যু ইসরায়েলিদের জন্য স্বস্তির মুহূর্ত। এর মাধ্যমে গাজায় ক্ষমতায় থাকা গোষ্ঠীটি নেতৃত্ব শূন্য। ইয়াহিয়া সিনওয়ার লক্ষ্য অর্জনের পথে একটি অপ্রতিরোধ্য বাধা ছিলেন। সেই বাধা আর নেই। তবে আমাদের সামনে অনেক কাজ বাকি রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং অন্যান্য ইসরায়েলি নেতাদের সাথে কথা বলব। তাদের অভিনন্দন জানাব এবং জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার পথ নিয়ে আলোচনা করব। এই যুদ্ধ শেষ করার জন্যও কথা বলব। যুদ্ধ নিরপরাধ মানুষের ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক এক বিবৃতিতে সিনওয়ারকে নিষ্ঠুর খুনি এবং সন্ত্রাসী বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, হামাসের উচিত অবিলম্বে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া এবং অস্ত্র সমর্পন করে যুদ্ধ বন্ধ করা।
ইসরায়েল সিনওয়ারকে হত্যা করেছে উল্লেখ করে গাজায় হামাসের হাতে বন্দি সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ। এক এক্স-বার্তায় তিনি লেখেন, ইয়াহিয়া সিনওয়ার গত বছরের ৭ অক্টোবরের সন্ত্রাসী হামলা এবং বর্বর কাজের মাস্টারমাইন্ড। হামাসের হাতে এখনও বন্দি জিম্মিদের মুক্তি আহ্বান জানাচ্ছে ফ্রান্স।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, মনে হচ্ছে হামাসের সামরিক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, ইসরায়েল হয়তো হামাস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তার আত্মরক্ষায় গুলি চালিয়েছে। আমি আশা করি, হামাস নেতা নিহতের ফলে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।
এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা দপ্তর বলেছে, ৭ অক্টোবর নিরীহ মানুষ হত্যার জন্য দায়ী সিনওয়ারের নিহতের খবরে কোনো শোক নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইসরায়েলিদের ওপর দমনপীড়নের প্রসঙ্গ টেনে গাজায় হতাহত বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেয় দেশটি।
ইসমাইল হানিয়াহ নিহতের পর তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন সিনওয়ার। গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলার পরিকল্পনাকারী ছিলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার; আইডিএফ এমনটিই বিশ্বাস করে। এর প্রমাণ হিসেবে তাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। বলা হয়, তিনিই ছিলেন সেই হামলার মাস্টারমাইন্ড।