27 C
Dhaka
Friday, September 27, 2024

এমপি আনারের হাড়-মাংস আলাদা করার দায়িত্বে ছিল যারা

কলকাতার নিউটাউনের সঞ্জিভা গার্ডেনের ফ্ল্যাটে খুন হওয়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হত্যাকাণ্ডের পর ধীরে ধীরে সামনে আসছে চাঞ্চল্যকরসব লোমহর্ষক তথ্য।
এমপি আনারের হাড়-মাংস আলাদা করার দায়িত্বে ছিল যারা

এবার আনোয়ারুল আজিমকে হত্যা ও মরদেহ থেকে হাড়-মাংস আলাদা করার কাজে জড়িতদের তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শুক্রবার (৩১ মে) এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে দেশে গ্রেফতার তিন আসামির দ্বিতীয় দফা রিমান্ড আবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

এদিন আট দিনের রিমান্ড শেষে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও শিলাস্তি রহমানকে আদালতে হাজির করে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদের আরও আট দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরো পড়ুন  ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ ছড়িয়ে লুটে নিচ্ছে সর্বস্ব

রিমান্ড আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান উল্লেখ করেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করা ও মরদেহ থেকে হাড়-মাংস আলাদা করার কাজ আগে থেকে তাদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করা ছিল। ফয়সাল, মোস্তাফিজ ও জিহাদ সরাসরি হত্যায় জড়িত ছিল। হাড় ও শরীরের অন্যান্য অংশ দূরে ফেলে দেয়ার কাজে সিয়ামসহ অজ্ঞাত দু-একজন সরাসরি জড়িত ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গ্রেফতার শিমুল ভূঁইয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি নিষিদ্ধঘোষিত পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) শীর্ষস্থানীয় নেতা। তিনি খুলনা, ঝিনাইদহ, যশোরসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তথা দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাদের নিষিদ্ধ দলের কার্যক্রম পরিচালনা করেন। শিমুল ভূঁইয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগীর আদর্শের বিরোধ ছিল। এ ছাড়া ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আখতারুজ্জামান ওরফে শাহিনের সঙ্গেও আনারের বিরোধ ছিল। এই দুই বিরোধকে কেন্দ্র করে শাহিন ও শিমুল ভূঁইয়া আনারকে হত্যার জন্য দীর্ঘদিন ধরে পরিকল্পনা করেন।

আরো পড়ুন  ঘণ্টাখানেক গোলাগুলির পর থমথমে থানচি

গত জানুয়ারি ও মার্চ মাসে দুবার আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করেও তারা ব্যর্থ হন। পরে শাহিন ভারতের কলকাতার অভিজাত নিউটাউন এলাকায় ২৫ এপ্রিল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরিকল্পনায় যুক্ত হন শিলাস্তি রহমান। পরে তাদের সঙ্গে হত্যা পরিকল্পনার মিটিং করে শাহিন গত ১০ মে বাংলাদেশে চলে আসেন।

ডিবির রিমান্ড আবেদনে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে শিমুল ভূঁইয়া ও শাহিনের নির্দেশে অন্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে কৌশলে ব্যবসার কথা বলে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। পরে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শিমুল ভূঁইয়া অন্য আসামিদের সহায়তায় আনারকে হত্যা করেন। হত্যার পর তার মরদেহের হাড়-মাংস আলাদা করে, মাংসের ছোট ছোট টুকরো করে ফ্ল্যাটের টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়। এ ছাড়া হাড়সহ শরীরের অন্যান্য অংশ ট্রলিব্যাগে করে কলকাতার নিউটাউন থেকে দূরে একটি খালে ফেলে দেয়।

আরো পড়ুন  যেসব অভিযোগে টিকটকার প্রিন্স মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, শাহিন ভূঁইয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য কলকাতার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি পুলিশকে জানানো হয়। পরে কলকাতার সিআইডি পুলিশ ওই ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংকে জমা হওয়া মানুষের মাংসসদৃশ কিছু উদ্ধার করে, যা ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আনোয়ারুল আজিম আনারের কি না, নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে কলকাতার সিআইডি পুলিশের মাধ্যমে মৌখিকভাবে জানানো হয়। এই আলামত উদ্ধারের সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।

সর্বশেষ সংবাদ