রেলের নতুন কেনা ২৫০টি বগিতে সংযুক্ত আছে অত্যাধুনিক সিসিটিভি ক্যামেরা। তবে চালু করা হয়নি চার বছরে একবারও। আবার গত বছর নাশকতার পর দু-একটি ট্রেনের বগিতে সিসি ক্যামেরা বসানো হলেও ছমাসের মাথায় সব অচল। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ট্রেনযাত্রীরা।
গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচনী সহিংসতায় মোহনগঞ্জ ট্রেনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সে ঘটনায় মারা যায় চারজন। এরপর নড়েচড়ে বসে রেল প্রশাসন। ট্রেনগুলোতে শুরু হয় সিটিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ, যা সম্পন্ন হয় মাত্র চারটিতে।
চারটি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসলেও তা কার্যকর করা যায়নি। অগ্নিকাণ্ডের শিকার সেই মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে উঠে দেখা যায়, পাঁচ মাস আগে সিসিটিভি বসানোর কাজ সম্পন্ন হলেও ১৩ বগির ট্রেনটিতে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে মাত্র তিনটিতে।
যে দু-একটি কোচে এখনও সিসি ক্যামেরা দৃশ্যমান, তার সবই অচল। ট্রেনটির মনিটরিং রুমে গিয়ে দেখা যায়, লন্ডভন্ড সব কিছু। বিকল হয়ে পড়ে আছে সিসিটিভির সংযোগ ক্যাবল ও মনিটরিং স্ক্রিন। ফলে আগের মতোই নিরাপত্তাহীনতার কথা জানাচ্ছেন যাত্রীরা।
শুধু তাই নয়, যাত্রী নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় তিন বছর আগে চীন ও কোরিয়া থেকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সিসিটিভি ক্যামেরা সংযুক্ত ২৫০টি কোচ আমদানি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। নতুন এসব কোচ দিয়ে বিভিন্ন রুটে চালানো হচ্ছে ট্রেন; অথচ এখনও ক্যামেরাগুলো চালু করা যায়নি। ফলে নিরাপত্তার যে ঘাটতি তা থেকেই যাচ্ছে ট্রেনে।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলছেন, রেলের নিজস্ব আইটি বিভাগ না থাকায় চালু করতে পারছে না বিশেষ এ সেবা। এমনকি এ সেবা দিতে যে লোকবল দরকার, তাও তৈরি করতে পারেনি রেলওয়ে।
অবশ্য সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো দ্রুত সচল করার আশ্বাস দিলেন সচিব ড. হুমায়ুন কবির। তিনি বলেন, ‘চায়না এবং কোরিয়ে থেকে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ যেসব কোচ নিয়ে আসা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে। একটা আদেশ দেয়া আছে এটাকে কেন্দ্রীয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। আমরা সে লক্ষ্যেই আগাচ্ছি।’
সারা দেশে তিন হাজার কিলোমিটার রেলপথে আন্তঃনগর, লোকাল, মেইল ও কমিউটার মিলিয়ে প্রতিদিন ৩৯৬টি ট্রেন চলাচল করে।