গ্রেপ্তার এড়াতে অভিবাসীদের সাগরে ফেলে দিচ্ছেন বলে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। মূলত তুরস্কের উপকূল থেকে গ্রিসের পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপগুলোতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নিয়ে আসা অন্তত দু’টি ঘটনায় মানবপাচারকারীরা যাত্রীদের সাগরে ফেলে দিয়েছেন বলে জানিয়েছে গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী। গ্রিক কর্তৃপক্ষ বলছে, মানবপাচারকারীরা নিজেদের রক্ষা করতে গিয়ে এমন বিপজ্জনক কৌশল বেছে নিচ্ছেন।
বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, এমন দু’টি ঘটনায় সাগরে ফেলে দেয়া আটজন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গত সপ্তাহে পূর্ব এজিয়ান সাগরে অভিবাসীবাহী মানবপাচারকারীদের একটি স্পিডবোট নিজেদের রক্ষা করতে উপকূলরক্ষীদের টহল জাহাজে ধাক্কা দেয়। পরে স্পিডবোটটিকে থামাতে গুলি করে উপকূলরক্ষীরা। এতে একজন অভিবাসী নিহত হন।
মঙ্গলবার গ্রিক উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে, প্রথম ঘটনায় একজন করে ফিলিস্তিনি ও আফগান নাগরিক একটি স্পিডবোট নিয়ে গ্রিক জলসীমায় আসে। তাদের স্পিডবোটটি উপকূলরক্ষীদের টহল নৌকার পেছনের অংশে ধাক্কা দেয়। কিন্তু অভিবাসনপ্রত্যাশীদের উদ্ধারে স্পিডবোটটিকে থামানোর চেষ্টা করা হলে বোটের দুই চালক পাঁচজনকে সাগরে লাফ দিতে বাধ্য করেন। এরপর তারা কস দ্বীপের দিকে পালিয়ে যান।
পরে ওই স্পিডবোট থেকে ৩০ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় সন্দেহভাজন দুই পাচারকারীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ছিল সিমি দ্বীপের কাছে। গ্রিক উপকূলরক্ষী বাহিনী বলেছে, স্পিডবোটটি ধাওয়া করা হলে তিনজন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে সাগরে লাফ দিতে বাধ্য করা হয়। পরে স্পিডবোটটি তুরস্কের দিকে চলে যায়।
পরে সাগরে ফেলে দেওয়া তিন অভিবাসনপ্রত্যাশীকে উদ্ধার করেন উপকূলরক্ষীরা। তারা বলেছেন, এই পারাপারের জন্য পাচারকারীদের জনপ্রতি প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিল। পূর্ব এজিয়ান সাগরের জলসীমায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে গ্রিস। ফলে মানবপাচারকারীরা এখন তাদের কৌশল পাল্টেছে বলে দাবি করেছে গ্রিস কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, উচ্চ গতিসম্পন্ন স্পিডবোটের আক্রমণাত্মক ব্যবহার ছাড়াও সেন্ট্রাল এজিয়ান হয়ে নতুন রুট খুঁজছেন পাচারকারীরা। সম্প্রতি লিবিয়া থেকে গ্রিসের দক্ষিণের ক্রিট দ্বীপমুখী অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন বেড়েছে।