গত ৩০ জুলাই (মঙ্গলবার) ‘পঞ্চগড় বাংলাদেশের অংশ জানেন না সীমান্ত পার হয়ে আসা ‘ভারতীয়’ এই তরুণী’ শিরোনামে ‘সময় সংবাদে’ সংবাদ প্রকাশের পর সানজিদা রুনা (২৩) নামে সেই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। নিজেকে ভারতীয় নাগরিক পরিচয় দিলেও তিনি বাংলাদেশের নাগরিক বলে সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন তার বাবা আলমগীর হোসেন হাওলাদার।
তরুণীর বাড়ি বরগুনা জেলায়। তার পরিবার বাস করেন ঢাকায়। দুই বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি।
সময় সংবাদের সংবাদ দেখে বৃহস্পতিবার (১ আগষ্ট) সকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ছবিসহ প্রমাণ নিয়ে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় আদালতে আসেন তার বাবা আলমগীর হোসেন হাওলাদার। তার দাবি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে রোগে ভুগছেন তার মেয়ে।
মেয়েকে নিজ জিম্মায় জামিন দেয়ার আবেদন করেন আলমগীর। পরে কাগজপত্র ও প্রমাণাদি বিচার বিশ্লেষণ করে রুনাকে ১০ হাজার টাকা বন্ডে আইনজীবী ও তার বাবার জিম্মায় জামিন দেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তিসহ আসামী হাজিরের জন্য দিন ধার্য করেন।
বাবা আলমগীর হোসেন হাওলাদার সময় সংবাদকে জানান, তাদের বাড়ি ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার গাওয়াইর এলাকায়। ভালোবেসে লালমনিরহাট এলাকার এক তরুণকে বিয়ে করেন ২০১৬ সালে। বিয়ের পর ৫ বছর পরে ২০২১ সালে তাদের সংসারে আসে একটি কন্যা সন্তান। নাম রাখা হয় সিনথিয়া স্মৃতি। ওই সন্তান প্রসবের পরেই তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। তাকে মানসিক হাসপাতালেও রাখা হয়। চলে চিকিৎসা সেবা। তবে বারবার পালিয়ে যাওয়ায় পূর্ণ চিকিৎসা করাতে পারেনি।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে হিন্দি সিনেমা সিরিয়াল দেখার পাশাপাশি ভারতীয় বন্ধুদের সঙ্গে ও কথা বলেন এই তরুণী। তাদের কাছ থেকেই হিন্দি আয়ত্ব করেন।
গত সোমবার (২৯ জুলাই) রাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে কালো বোরখা পরে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে পঞ্চগড়ে আসেন রুনা। খোঁজাখুজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তরুণীর বাবা বলেন, ‘সময় সংবাদে আত্মীয় স্বজনরা তার সংবাদ দেখে আমাকে অবগত করলে আমিও তা দেখে নিশ্চিত হই। পঞ্চগড়ে এসে সব ডকুমেন্ট জমা করে আমার মেয়েকে ঢাকায় বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছি।’
এর আগে গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) তরুণী দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর ইউনিয়নের বামন পাড়া এলাকায় আটক হওয়ার পর হিন্দি ভাষার কথার পাশাপাশি নিজেকে ভারতীয় পরিচয় দেন। তবে বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) আদালতে বাবার সঙ্গে অর্নগল বাংলা ও ঢাকার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন রুনা।
মঙ্গলবার ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধ ভাবে বাংলাদেশে প্রবেশের দায়ে মেয়েটির বিরুদ্ধে মামাল হয় তেঁতুলিয়া মডেল থানায়। বৃহস্পতিবার আদালতে বাংলাদেশি হিসেবে তার বাবা সব তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করলে আদালত তাকে তার বাবার জিম্মায় জামিন দেন।