28 C
Dhaka
Tuesday, September 17, 2024

মণিপুরে ভয়াবহ সংঘাত, বন্দুকযুদ্ধ-ড্রোন-রকেট হামলায় নিহত ৫

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের জিরিবাম ও বিষ্ণুপুর জেলায় নতুন করে সহিংসতা শুরু হয়েছে। শনিবার এই দুই জেলায় ড্রোন ও রকেট হামলার পাশাপাশি গোলাগুলির ঘটনাও ঘটেছে। এতে অন্তত পাঁচজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, শনিবার মণিপুরের জিরিবাম জেলায় ঘুমন্ত এক ব্যক্তিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। ওই চারজনই সশস্ত্র ছিলেন।

মণিপুর পুলিশ বলেছে, গুলি চালিয়ে যাকে হত্যা করা হয়েছে, তিনি জেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের বিচ্ছিন্ন এক এলাকায় একা বসবাস করতেন। বিদ্রোহীরা তার বাড়িতে হামলা চালায় এবং ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে।

আরো পড়ুন  ট্রেনে কাটা পড়া মায়ের দেহাংশ কুড়াচ্ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে

এই হত্যাকাণ্ডের পর মণিপুরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক গুলি বিনিময় হয়। জেলা সদর থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে গোলাগুলির এই ঘটনায় অন্তত চারজনের প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের প্রত্যেকেই বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি গোষ্ঠীর সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে, শুক্রবার মণিপুরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রকেট হামলায় একজনের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘটনার পর রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ বলছে, বিষ্ণুপুর জেলায় রকেট হামলায় ৭২ বছর বয়সী ব্যক্তি এক নিহত ও অন্য পাঁচজন আহত হয়েছেন। এর ফলে সহিংসতায় বিধ্বস্ত মণিপুরের রাজধানী ইম্ফল উপত্যকায় উত্তেজনা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে।

আরো পড়ুন  ‘কেউ পাশে না থাকলে একাই যুদ্ধ করবে ইসরায়েল’

কর্মকর্তারা বলেছেন, শুক্রবার অন্তত দুটি রকেট নিক্ষেপ করেছে বিদ্রোহীরা। এর মধ্যে বিষ্ণুপুরের ত্রংলাওবিতে একটি রকেটের আঘাতে দুটি অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। আর ময়রাং শহরে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মাইরেম্বাম কোইরেংয়ের বাসভবনের কাছে আঘাত হেনেছে দ্বিতীয়টি।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইম্ফল পশ্চিম জেলার কাছাকাছি দুটি স্থানে লোকজনকে লক্ষ্য করে অপরিশোধিত বোমা নিক্ষেপ করা হয়। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে মণিপুরে ড্রোন ও রকেট হামলার ঘটনা ঘটছে।

গত বছরের মে মাসে মণিপুরের সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সহিংসতায় দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ও প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়। এরপর রাজ্যজুড়ে থেমে থেমে সহিংসতা চললেও এই প্রথমবারের মতো চলমান জাতিগত সংঘাতে ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন  ফ্রান্সে মাঝ আকাশে দুই যুদ্ধবিমানের মুখোমুখি সংঘর্ষ, যা জানা গেল

শুক্রবার সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতে সম্প্রদায়ের লোকজন ইম্ফল উপত্যকার পাঁচটি জেলায় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে। রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ এই প্রতিবাদ-সমাবেশে অংশ নেন। সেদিনই ড্রোন ও রকেট হামলার ঘটনা ঘটেছে। নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ায় মণিপুর সরকার রাজ্যের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি রাজ্যজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ