26 C
Dhaka
Friday, October 18, 2024

মেয়েকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠালাম, তাকে তারা বাঁচিয়ে রাখলো না!

কুষ্টিয়ার মিরপুরে লিজা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে। নিহত লিজার সাড়ে তিন মাসের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে তার শ্বশুর বাড়ি এলাকার লোকজন লিজা খাতুনকে উদ্ধার করে পাশের জেলা চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত লিজা খাতুন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের ভোমরদাহ গ্রামের বিলপাড়ার ভ্যানচালক আরিফুল ইসলামের মেয়ে। তিনি কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার মালিহাদ গ্রামের আবু তাহেরের স্ত্রী।

নিহত লিজা খাতুনের বাবা আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেছে জামাই আবু তাহের ও তার বাবা-মা। আমার মেয়ের আসওয়াত হোসেন নামে সাড়ে তিন মাসের পুত্র সন্তান রয়েছে। এখন আমার নাতির কি হবে?

আরো পড়ুন  যৌতুকের দাবিতে অন্তঃসত্ত্বাকে হত্যার অভিযোগ, পলাতক শ্বশুরবাড়ির লোকজন

আরিফুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, গত দুবছর আগে পারিবারিকভাবে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আমার মেয়েটা মাদরাসার ছাত্রী ছিল। বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো আবু তাহের। কিছুদিন আগেও মারধর করে। এরপর আমি মেয়েকে আমার বাড়িতে নিয়ে আসি। তখন মেয়ে আমাকে জানায়, জামাই আবু তাহের বলেছে- আমার উপার্জনের সম্বল ভ্যানটি যেন তাকে দিয়ে দেই, নয়তো একটি নতুন ভ্যান যেন কিনে দেই। এ কারণে তাকে মারধর করেছে।

নিহতের বাবা বলেন, আমি মেয়েকে বলেছিলাম, এখন আমার হাতে টাকা নেই। চাষবাস করে একটি গরু কিনে দেব বা ভ্যান কিনে দেব। এরপর আমি মেয়েকে বুঝিয়ে শ্বশুরবাড়ি পাঠাই। এই পাঠানোই যে আমার কাল হবে কে জানতো? আমার মেয়েটাকে বাঁচিয়ে রাখলো না তারা। মেয়েটাকে তারা মেরে এখন বলছে আত্মহত্যা করেছে। আমার মেয়ে মাদরাসার ছাত্রী, সে কখনোই আত্মহত্যা করবে না।

আরো পড়ুন  রাজবাড়ীতে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কোরআন খতম ও দোয়া

তিনি বলেন, মেয়ের শ্বশুরবাড়ি এলাকার লোকজনের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। গিয়ে মেয়ের মরদেহ দেখতে পাই। মেয়ের শ্বশুর বাড়ির কেউ ছিল না। তারা আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। আমার নাতিটা তাদের কাছে। শুনেছি, নাতিটা খুব কান্নাকাটি করছে। যারা আমার মেয়ের মরদেহ হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন তারা বলছেন, মৃত অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে আসা হয়েছে।

আরো পড়ুন  দুই ঘণ্টায় ২৬ জনকে কামড়ে দিলো একটি কুকুর!

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের ঠোটে আঘাতের চিহ্ন আছে। ওরা আমার মেয়েকে গলা টিপে হত্যা করেছে। আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।

বুধবার দুপুরে লিজা খাতুনের মরদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ। বিকেলেই মরদেহ বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

লিজা খাতুনের মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী কর্মকর্তা আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, লিজা খাতুনের পরিবারের সদস্যদের দাবি তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। আমরাও প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি লিজাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তার ঠোঁট ও গলায় ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। রিপোর্ট এলে বিস্তারিত জানা যাবে।

সর্বশেষ সংবাদ