স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত দেশের ১০০ রোগীকে প্রতীকী মূল্যে চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামসহ ১৭টি সংগঠন।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
বাংলাদেশ স্তন ক্যান্সার সচেতনতা ফোরামের প্রধান সমন্বয়কারী ও গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান।
এতে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- জনস্বাস্থ্য ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. হালিদা হানুম আখতার, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. আবু জামিল ফয়সাল, ফোরামের সমন্বয়কারী ও সিওসি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মোছাররত সৌরভ, সিনিয়র স্বাস্থ্য প্রতিবেদক ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টারস ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাবেক অতিরিক্ত সচিব আব্দুল হাকিম মজুমদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহনাজ পলি, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাশহুদা শেফালী, সিওসি ট্রাস্টের সম্পাদক ও ট্রাস্টি ইকবাল মাহমুদ, নারীপক্ষের ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রকার মশিহ উদ্দিন শাকের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মো. সায়েদুর রহমান বলেন, ক্যানসারের ওষধ বিনামূল্যে হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা যায় কি না সেই ব্যাপারে আমরা দেখি কিছু করা যায় কি না? এটা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের মধ্যেই পরে। একইসঙ্গে ক্যানসারের সকল ওষধ ট্যাক্স ফ্রি করার কথাও ভেবে দেখার সময় এসেছে। আশা করছি আগামী বাজেটের আগেই এ ব্যাপারে আমরা কিছু করতে পারব।
স্বাগত বক্তব্যে ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস পালনের উদ্দেশ্য, ফোরাম প্রতিষ্ঠা এবং এ বছরের প্রতিপাদ্য বিশ্লেষণ করেন। তিনি জানান, ১২তম বারের মতো দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর স্তন ক্যানসার দ্রুত নির্ণয় ও পরিপূর্ণ চিকিৎসার গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেক রোগীর ক্যান্সার নির্ণীত হওয়ার পরও অসচেতনতা, অজ্ঞতা ও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে চিকিৎসা নিতে পারেন না। অনেকে আংশিক চিকিৎসার পর চিকিৎসায় বিরতি দেন বা দিতে বাধ্য হন। ফলে ক্যানসার আরও বিপদজনকভাবে ফিরে আসতে পারে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। একই সঙ্গে চিকিৎসা সুবিধা ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিকভাবে সবার নাগালের মধ্যে আনাও জরুরি।
তিনি আরও বলেন, আগামি এক বছর ফোরাম এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাবে। পাশাপাশি দরিদ্র স্তন ক্যানসার রোগী, যারা অর্থাভাবে অপারেশন করাতে পারছেন না, মাত্র পাঁচ হাজার টাকার প্রতীকী খরচে একশ’জন রোগীকে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে দক্ষ ক্যানসার সার্জন দিয়ে অপারেশন করিয়ে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ফোরাম ও এর বিভিন্ন সদস্য সংগঠন।
ডা. হালিদা হানুম আখতার বলেন, স্তন ক্যানসার সম্পর্কে আমরা যখন সচেতন হবো, তখনি চিকিৎসার উদ্যোগ নিতে পারবো। যত তাড়াতাড়ি স্তন ক্যান্সার নিশ্চিত করতে পারবো, তত তাড়াতাড়ি ওই রোগের প্রকোপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারবো। রোগের যন্ত্রণা, আর্থিক খরচ সব কমিয়ে আনতে পারবো।
রাশেদ রাব্বি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্কুল হেলথ প্রোগামে স্তন ক্যানসার সচেতনতার বিষয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার। এর আগে, দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের চারদিকে প্রতীকী গোলাপি সড়ক শোভাযাত্রা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়।