অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ শনিবার বিকেলে দুর্গাপূজা পরিদর্শন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যাবেন।
শনিবার (১২ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সেখানে তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ জানান, প্রধান উপদেষ্টা আজ বিকেল ৩টায় ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে যাবেন।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এসএসএফসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে কাজ করছে। সেখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট দুপুরে ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্ক্ষা সেখানে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক। সমস্ত সমস্যার গোড়া হলো আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন করেছি, সবকিছু পচে গেছে। এ কারণে এই গোলমালগুলো হচ্ছে।’
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ তিনি বলেন, ‘আপনারা ক্ষোভের মধ্যে চলে যাইয়েন না। ক্ষোভের মধ্যে গেলেই বিভিন্ন রকম মারামারি লেগে যায়। একত্রে আসেন। এক আইন। বলেন, আমাদের আইনের অধিকার দিতে হবে। আজকে যেটা বললেন যে, আইনের অধিকার পাই না। বিচার পাই না। এটাই হলো আসল জিনিস। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক যে আয়োজন করেছি, এটা বায়াস্ট একটা আয়োজন। একটা খুঁড়তে আরম্ভ করবেন, তারপর তারা মজা পেয়ে যাবে। ওই মজার খেলাতে আমাদের নিয়ে যাবেন না।’
ড. ইউনূস বলেন, ‘সবার অধিকার সমান। এ দেশের মানুষ হিসেবে অধিকার আদায়ে বিভক্ত হয়ে নয়, আমরা এক মানুষ, এক অধিকার; এর মধ্যে কোনো পার্থক্য করবেন না। আমাদের একটু সাহায্য করুন। ধৈর্য ধরেন, কিছু করতে পারলাম কী পারলাম না, সেটা পরে বিচার করবেন। যদি না পারি আমাদের দোষ দিয়েন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ন্যায় বিচার হলে কে বিচার পাবে না বলেন? আমি কী দেখতেছি, এটা কোন জাতের? কোন ধরনের? তা কি আইনে বলা আছে? ওই সম্প্রদায়ের হলে ওই কোর্টে যাবে, ওই সম্প্রদায় হলে ওই আদালতে যাবে? আইন একটা। কার সাধ্য আছে বিভেদ করে যে ওই রকম একটা, এ রকম একটা। এটা হতে পারে না। এটা এমন রোগ মূলে যেতে হবে। আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেটা পেলে আমরা বাকস্বাধীনতা পাব। এগুলো আছে, নতুন কিছু না। আমাদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা হলো আমাদের মূল লক্ষ্য। আপনারা যদি টেনে টেনে নিয়ে আসেন- আমি অমুক, আমি তমুক। এটা আবার পুরোনো খেলায় চলে গেলেন। আমাদের শিকার করার জন্য যারা বসে আছে তারা শিকার করবে। আপনারা বলুন, আপনারা মানুষ, বাংলাদেশের মানুষ। আমার সাংবিধানিক অধিকার আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন।’