সম্প্রতি রাজধানীর বনানীর একটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে গিয়ে উত্তরীয় গ্রহণ ও বক্তব্যের সময় ‘ধর্মান্ধ’ শব্দ ব্যবহার করায় অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেনকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে। ধর্ম উপদেষ্টার এই শব্দ ব্যবহারকে অনেকেই ইতিবাচকভাবে নেননি। তবে সমালোচকদের স্বাগত জানিয়ে তাদের শুভাকাঙ্ক্ষী বলে অভিহিত করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা। তাদের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে আরও সচেতন থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি।
রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরের দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি এসব কথা জানান।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কিছু শব্দ এবং বাক্য নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির কারণে সমালোচনা এবং বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ যে আমার অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী, বন্ধু এবং সম্মানিত উস্তাদগণ আমাকে এ বিষয়ে সৎ পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের উদ্বেগকে গুরুত্ব দিয়ে আমি স্বীকার করছি- আমার কিছু শব্দ ব্যবহারে অসাবধানতা ছিল, যা অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে কিছু ভুল ধারণার জন্ম দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও সচেতন থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমি সবার কাছে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি, বিশেষত যাদের মনে কষ্ট দিয়েছি তাদের প্রতি আমার আন্তরিক সহানুভূতিপূর্ণ সমবেদনা রয়েছে।’
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, ‘আলেম সমাজের প্রতি আমার শ্রদ্ধা চিরদিনের। তাদের সান্নিধ্যে আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়েছি এবং আজও দেশের শীর্ষ আলেমসহ সব মাসলাকের আলেম সমাজের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রয়েছে। আমি আলহামদুলিল্লাহ, সবসময় তাদের পরামর্শকে যথাযথ মূল্য দিই এবং কখনো ভুল করলে তা শুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত থাকি। আমি আলেম ও তালিবুল আলেমদের গঠনমূলক সমালোচনাকে সর্বদাই ভালোভাবে গ্রহণ করি। সমালোচনার মাধ্যমে অনেক কল্যাণের পথ খোলা হয়। যারা গঠনমূলক ও আদবপূর্ণ ভাষায় সমালোচনা করেছেন, তাদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। তবে, কিছু অশালীন সমালোচনার মাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি তাদের জন্য দোয়া করি- আল্লাহ যেন তাদের শালীন ও গঠনমূলক সমালোচনার শক্তি দান করেন।’
ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘আমাদের সরকার, আপনাদেরই সরকার। এ দেশ ও জাতি গঠনে আপনাদের ত্যাগ ও অবদানের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আমরা যদি কোনো ভুল করি, তা শুধু সরকারের জন্য নয়, সবার জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। এজন্য সবাইকে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও একত্রিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমার শ্রদ্ধেয় আলেমদের পরামর্শ এবং আপনাদের উদ্বেগের কারণে আমি আমার কর্মপন্থায় কিছু পরিবর্তন এনেছি। আমরা সবাই মানুষ, ভুল হওয়া স্বাভাবিক। তাই যদি কোনো পরামর্শ থাকে, সেটি আলেমদের মাধ্যমে সুপরামর্শ আকারে দিন। আর যদি সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা করতে হয়, অনুগ্রহ করে শালীনতা বজায় রেখে তা করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়াত দিন এবং আমাদের মাধ্যমে দ্বীনের কল্যাণের পথ আরও প্রসারিত করুন। আমরা যেন দেশ ও জাতি গঠনে সফলভাবে ভূমিকা রাখতে পারি। আল্লাহুম্মা আমিন।’