বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টার কাজে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। এসময় তিনি বলেন বর্তমানে সবচেয়ে অ্যাকটিভ উপদেষ্টা হওয়া উচিত ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টার, যিনি মন্ত্রণালয়ে অফিস না করে হাসপাতালে করবেন কিন্তু আমরা তাকে তেমন অ্যাকটিভ দেখতে পাই না।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকালে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এসময় তিনি বলেন, স্বাস্থ্য উপদেষ্টার প্রত্যেকটা হাসপাতালে দৌড়ে বেড়ানো উচিত। আমরা এই কথাটা বারবার বলেছি। কেন আমরা এখনো এখানে আসব? আজ দুই থেকে আড়াই মাস হয়ে যাচ্ছে, অথচ তারা বলছে সরকার থেকে কোনো সাহায্য পায়নি। একটা মন্ত্রণায়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা কি খুব বড় ব্যাপার? এই এক একটা মানুষকে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হলে কি খুব বেশি টাকা লাগবে! তাহলে কেন আমার আহত ভাইয়েরা এই কথাটা বলল? আমাদের কাছে এমন অনেক অভিযোগ এসেছে। ছবি ও ভিডিও এসেছে।
এই হাসপাতালে এসে দেখলাম এখানে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তাদের যে জিনিসগুলো সেবার জন্য দেওয়া হয়, এই জিনিস গুলোর মধ্যে যেখানে বেডপ্যাক দেওয়ার কথা সেখানে পেপার দেওয়া হয়েছে। যে জায়গায় গুলি লেগেছে সেই জায়গায় পেপার দেওয়া মানে তো সেখানে ইনফেকশন করবে।
আরেকটা অভিযোগ এসেছে এখানকার পরিবেশ, এখানে নতুন বিল্ডিং আছে সেখানকার পরিবেশ ভালো। কিন্তু আজ থেকে কয়েক বছর আগে কিছু রুম পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেই রুমগুলোতে রোগী রাখা হয়েছে। এখন তারা যদি বলে এখানে রোগীর আধিক্য বেড়েছে বলে পরিত্যক্ত রুমে রাখা হবে, যেগুলো গোডাউনের চেয়ে খারাপ। সেটাতো যৌক্তিক হতে পারে না। যে রুমগুলো দুই জনের, যেগুলো ভাল রয়েছে সেখানে আরেকটা বেডপ্যাক আপনি লাগান। সেটা না করে তারা পরিত্যক্ত রুম গুলোতে রেখেছে। রোগী ভাল হওয়ার জন্য ভাল পরিবেশ দরকার। সেই পরিবেশ যদি নরমাল পরিবেশের চেয়ে খারাপ হয় তাহলে রোগী তো ভাল হওয়ার চেয়ে খারাপের দিকে যাবে।
সারজিস আরও বলেন, শুধু সিআরপি না বাংলাদেশের যে কোনো হাসপাতালে যেদিন কেউ পরিদর্শনে আসবে সেদিন ধুয়েমুছে চকচকে করা হয়। আমরা তো মাত্র ত্রিশ মিনিটের নোটিশে এসেছি, আমাদের সামনেও তারা ধোয়ামোছা শুরু করেছে। যা আমাদের চোখে পরেছে। আমরা আসবো জন্য এটা করা হবে তা উচিৎ না। এটা সবসময় করা উচিত। আমাদের কাছে আরও বেশ কিছু অভিযোগ এসেছে যে রোগীদের যে প্রত্যাশা একদিন কিংবা দুদিন পর হোক ডাক্তার রোগীদের দেখে আসবে। সেই জায়গায় ১৫ দিনে একজন ডাক্তারের সাথে তারা কথা বলতে পেরেছে। এখানে বেশীর ভাগ রোগী প্যারালাইজড, হাতের সেন্স নাই পায়ের সেন্স নাই। সেই রোগীকে কেন ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখাতে হবে। ডাক্তার বেডে বেডে এসে রোগীদের দেখবে না? আমরা তো হাসপাতালে হাসপাতালে এটাই দেখি। কিন্তু এখানে রোগীদেরই ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখাইতে হয়। আমাদের কাছে কয়েকটা পেশার মানুষের জন্য শ্রদ্ধার জায়গাটা অনেক উপরে। এর মধ্যে শিক্ষক ও ডাক্তার আছেন। তাদের জায়গায় এমনটা দেখলে আমাদের নিজেদের মর্মাহত করে।
এই অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কী ধরনের পদক্ষেপ নেবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের হেলথ টিম এখানে আসবে। প্রশাসনের সাথে কথা বলবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে প্রশাসনের সাথে কথা বলব।