14 C
Dhaka
Friday, January 10, 2025

মতিয়া চৌধুরীর মৃত্যুতে বিভিন্ন সংগঠনের শোক

ষাটের দশকের সামরিক শাসনবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অগ্নিকন্যা নামে খ্যাত বেগম মতিয়া চৌধুরীর প্রয়াণে শোক জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, বজলুর রহমান স্মৃতিপদকের জুরিবোর্ডের সদস্যরা।

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরকে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক’ প্রবর্তনের নিমিত্তে আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক বজলুর রহমানের সহধর্মিনী মতিয়া চৌধুরীর সহায়তায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিশিষ্টজনের সমন্বয়ে গঠিত জুরি বোর্ডের মনোনয়নের ভিত্তিতে ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক’ প্রদান করে আসছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরী শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও সরল অনাড়ম্বর জীবন যাপনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন। ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক প্রদান জুরিবোর্ড’ তার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করছে।

অগ্নিকন্যা, ষাটের দশকের বিশিষ্ট ছাত্র নেতা, এদেশের প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়া চৌধুরীর প্রয়াণে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীর শোক এবং স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

আরো পড়ুন  আসিম জাওয়াদ, হার না মানা এক বীর

প্রসঙ্গত, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় যান। এভারকেয়ার হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও শেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মতিয়া চৌধুরী প্রশ্নবিদ্ধ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর মন্ত্রীর মর্যাদা পেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ আমলের সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুর পর একাদশ জাতীয় সরকারের মেয়াদে সংসদের উপনেতার দায়িত্বে ছিলেন বেগম মতিয়া।

আরো পড়ুন  ‘শুধু অভ্যুত্থান নয়, আমরা রাষ্ট্র গঠনের নেতাও পেয়ে গেছি’

মতিয়া চৌধুরীর জন্ম ১৯৪২ সালের ৩০ জুন পিরোজপুর জেলায়। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ব্যক্তিজীবনে ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থি রাজনীতি দিয়ে। তিনি ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ) সদস্য ছিলেন। ইডেন কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন। ‘অগ্নিকন্যা’ নামে পরিচিত মতিয়া চৌধুরীকে জেলে থাকা অবস্থায় পূর্ব পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, কৃষক সমিতির সদস্য করা হয়। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ভারতে গিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সেখানকার নারী নেত্রীদের নিয়ে জনমত তৈরি করেন। এভাবেই তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম, প্রচারণা, যোগাযোগ এবং আহতদের শুশ্রূষায় সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সময়কালে তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগ দেন।

আরো পড়ুন  অসংখ্য বেনজীর-আজিজ তৈরি করেছে আ. লীগ: মির্জা ফখরুল

১৯৯৬ ও ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২১ সালে বাংলা একাডেমি তাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে সংসদ সদস্য পদ হারান তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ