ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবসকে জাতীয় দিবস বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। এসব দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।
৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট এবং ৪ নভেম্বর এই ৩টি দিবসই স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলে মনে করে উদীচী। এসব দিবস বাতিল করলে তা প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা বলে প্রতীয়মান হতে পারে।
উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, এসব দিবস বাংলাদেশের অভ্যুদয় এবং রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, কয়েকটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এসব দিবস ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার এবং শেখ হাসিনার পরিবারের সাথে সম্পর্কিত বলে মন্তব্য করেন সরকারের তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা। তবে এমন চিন্তা সঠিক নয় বলে মনে করে উদীচী।
বিবৃতিতে উদীচীর নেতারা বলেন, ৭ মার্চ বাংলাদেশের অভ্যুত্থানের ইতিহাসের অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিন। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দেন, মূলত সেই ভাষণেই উদ্বুদ্ধ হয়েই সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা পায় জাতি।
এ ছাড়া ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যার মতো ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেই বিরল। ওই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে আবারও পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল।
এছাড়া ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস বাতিলও অবিবেচনাপ্রসূত। ১৯৭২ সালের এই দিনই গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়, যেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এসব দিবস কোনোভাবেই কোন দল বা পরিবারের ব্যক্তিগত দিবস নয়, বরং পুরো জাতির দিবস।