সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ এবং ভ্রমণ সীমিতকরণ প্রস্তাবের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের ব্যানারে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টোয়াক), হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন ও সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব) সহ ১৩টি সংগঠনের উদ্যোগে এ কর্মসূচিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, সেন্টমার্টিনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সেন্টমার্টিনের শিক্ষার্থীসহ বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দ্বীপটিতে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ করা হলে তিন লাখেরও অধিক মানুষের জীবিকা হুমকিতে পড়বে। নিঃস্ব হবেন সেখানে শত শত কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করা ব্যবসায়ীরা। সেজন্য বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া এ সিদ্ধান্ত থেকে বর্তমান সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা। একইসঙ্গে পর্যটনশিল্পকে চলমান রেখে পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান তারা।
সেন্টমার্টিন দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশীর সভাপতিত্বে ও আব্দুর রহিম জিহাদীর সঞ্চালনায় এতে ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)-এর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কুয়াব)-এর সিনিয়র সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান, সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল আলম, বোট মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সিদ্দিকুর রহমান, সেন্টমার্টিন ইউপির সাবেক সদস্য আব্দুর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট কেফায়েত খান, আব্দুল মালেক ও হেলালুদ্দীনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন থেকে সেন্টমার্টিন নিয়ে বিগত সরকারের গৃহীত পর্যটনবিরোধী সব সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ১৮ দফা দাবি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বক্তারা। এ সব দাবির মধ্যে রয়েছে, দ্বীপটিকে প্লাস্টিক মুক্ত ঘোষণা অথবা প্লাস্টিক বর্জ্য রিসাইক্লিং এর ব্যবস্থা, বাইরে থেকে আসা বোতলজাত পানি ও কোমল পানীয় নিষিদ্ধ করা, ট্রেনিং সেন্টার খুলে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করা, ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত জাহাজ চলাচলের অনুমতি প্রদান, সেন্টমার্টিন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দ্বীপবাসীসহ সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণ, সেন্ট মার্টিন্সকে শতভাগ কুকুরমুক্ত করা, দ্বীপে জেনারেটর সম্পূর্ণ নিষিদ্ধকরন, সরকারিভাবে সকল রাস্তা প্রশস্ত ও পাকা ড্রেন নির্মাণ, দ্বীপের চতুর্দিকে মেরিন ড্রাইভ রোড নির্মাণ ও পরিবেশসংক্রান্ত সকল মামলা প্রত্যাহার করা।
মানববন্ধন শেষে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন।