চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক বেপরোয়া মোটরসাইকেল ও বিচ বাইকারদের দৌরাত্ম্যে বিরক্ত পর্যটকরা। প্রতিনিয়ত কিছু উশৃঙ্খল লোক ইচ্ছামতো সৈকতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ায়। এতে আগত পর্যটকদের দুর্ঘটনার পাশাপাশি ইভটিজিংয়ের কবলে পড়তে দেখা যায়। এ নিয়ে পর্যটকদের সঙ্গে মোটরসাইকেল চালকদের ঝগড়াঝাটি হাতাহাতিতেও গড়ায়। সৈকতে মোটরসাইকেল প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্তদের অনৈতিকভাবে অর্থ দিয়ে এসব বাইক প্রবেশ করে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এমনকি সিএনজি চালিত অটোরিকশাও অনেক সময় সৈকতে ঠুকে পড়ে।
সৈকত ঘুরে দেখা যায়, মোটরসাইকেল ও বিচ বাইক বেপরোয়া গতিতে সৈকতে চক্কর দিচ্ছে। এতের ভয়ে পর্যটকদের সঙ্গে আসা শিশুরা ভয়ে অভিভাবকদের হাত পর্যন্ত ছাড়তে পারছে না। নারী পর্যটক দেখলেই বাইকের গতি বাড়িয়ে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিও করে তারা।
জানা যায়, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল ও দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর একসঙ্গে দেখার সুযোগ হওয়ায় পর্যটকদের কাছে পারকি সমুদ্র সৈকত বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এ ছাড়া সময় বাঁচাতে পর্যটকরা কক্সবাজার কিংবা কুয়াকাটা না গিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ছুটে আসেন। সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার এবং বিশেষ বিশেষ দিনে এখানে পর্যটকের সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে যায়। পর্যটকরা সপরিবারে ঘুরতে আসেন। সৈকতের ওপরে আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলেও দায়িত্বরতদের টাকার বিনিময়ে এসব মোটরসাইকেল সৈকতে নামিয়ে ইচ্ছামতো ছুটাছুটি করে বাইকাররা। এজন্য পর্যটকরা ট্যুরিস্ট পুলিশ না থাকা ও সৈকতে দায়িত্বরতদের দায়ী করেছেন।
রাউজান থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা কানিজ ফাতেমা জানায়, সৈকতে মোটরসাইকেলের ভয়ে বাচ্চারা একটু মুক্তভাবে দৌড়াদৌড়ি করতে পারছে না। বিরক্তিকর পরিস্থিতির শিকার হচ্ছি।
কর্ণফুলী থানার ওসি মো. মনির হোসেন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এরপরও পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু লোক সৈকতে মোটরসাইকেল নিয়ে ঢুকে পড়ে। পর্যটকরা যেন নির্বিঘ্নে ঘুরতে পারে সে ব্যবস্থা করা হবে।
আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইশতিয়াক ইমন বলেন, সৈকতে মোটরসাইকেল প্রবেশ নিষিদ্ধ, মোটরসাইকেলের জন্য আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।