১৯৫২ সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি অলি আহাদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল রোববার (২০ অক্টোবর)। ২০১২ সালের এ দিনে ৮৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মরহুমের গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এতে সবাইকে যোগদানের জন্য প্রয়াতের কন্যা ও সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ ছাড়াও আগামী ২৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডেমোক্রেটিক লীগের উদ্যোগে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে।
মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার (১৯ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত এবং সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস প্রয়াত অলি আহাদের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০০৪ সালে অলি আহাদকে স্বাধীনতা পদক প্রদান করা হয়। ১৯২৮ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
অলি আহাদ ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। ভারত বিভক্তির পূর্বে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রনেতা হিসেবে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৪৯ সালে গঠিত ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, প্রগতিশীল যুব সংগঠন গণতান্ত্রিক যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক, বায়ান্নের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের অন্যতম সাহসী নেতা এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তখন ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। পরে অলি আহাদ জাতীয় লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক লীগের সভাপতি ছিলেন।
অলি আহাদ ১৯৭১ সালের আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং এর প্রেক্ষাপট রচনায় শীর্ষস্থানীয় সংগঠক ছিলেন। মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে শেখ মুজিব-অলি আহাদ জুটি তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে আওয়ামী লীগের গণভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বাধীনোত্তর সময়ে অলি আহাদ ৬ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ বিভিন্ন বিরোধীদলীয় জোটে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ১৯৯৭ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গঠিত ৭ দলীয় জোটের অন্যতম শীর্ষ নেতা ছিলেন। অলি আহাদ গণতন্ত্র ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করতে গিয়ে পাকিস্তান আমল থেকে শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশে মোট ১৭ বার কারারুদ্ধ হন। শুধু এরশাদ সরকারের আমলে তিনি ছয়বার কারারুদ্ধ হয়েছেন।
অলি আহাদের স্ত্রী অধ্যাপিকা রাশিদা বেগম বাংলাদেশের শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ছিলেন এবং একমাত্র কন্যাসন্তান ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য ছিলেন।